সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করবে: আইনমন্ত্রী

ল রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: সংগৃহীত

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছুটা অপব্যবহার হওয়ায়, সরকার এই আইনের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

তিনি বলেন, 'আমি এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমার সামনে একটি নির্দেশনা জারি করেছেন যেন কেউ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলে তা পরীক্ষার জন্য তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে তৈরি সেলে পাঠানো হবে।

'পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেল যদি বুঝতে পারে যে মামলা চালানোর জন্য প্রাথমিক প্রমাণাদি আছে, তাহলে তা বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠানো হবে। মামলায় প্রয়োজনীয় তথ্য বা উপাত্ত না থাকলে তা গ্রহণ করা হবে না,' বলেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সংগঠন ল রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, 'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার পর আসামিদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তারের একটা প্রবণতা আমরা দেখেছি। কিন্তু এখন এই আইনের অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিবেচনা করে আদালত মামলা গ্রহণ করলেই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে, এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'

'অন্যথায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হবে,' বলেন তিনি।

এলআরএফের বিদায়ী কমিটি নবনির্বাচিত কমিটির কাছে সংগঠনের দায়িত্ব হস্তান্তর উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, 'সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে করা মামলা সেলে পাঠানোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা সাংবাদিকরা দেখেননি। যখন কোনো বিভাগীয় নির্দেশনা জারি করা হয়, তার অনুলিপি প্রকাশ করা হয় না।'

তিনি বলেন, 'গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব না করে ডিজিটাল সাইবার অপরাধ মোকাবিলার জন্য এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।'

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মতো অপরাধের বিচারের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপহার দেওয়া সংবিধানে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন কোনো আইন করেননি যা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে নষ্ট করে।'

'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং সে অনুযায়ী আইন সংশোধন ও পরিমার্জন করার সময় আমরা সম্পাদক পরিষদ ও টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। সরকার অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করেছে,' বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'আমি ইতোমধ্যে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি এবং তার সঙ্গে আরও আলোচনা বলব যেন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নীতিমালা সংবিধান এবং সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী না হয়।'

এলআরএফের বিদায়ী সভাপতি মাসুদুল হকের সভাপতিত্বে সভায় আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা, নবনির্বাচিত এলআরএফ সভাপতি আশুতোষ সরকার, সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সারওয়ার হোসেন ভূঁইয়া এবং বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইয়াছিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

2h ago