‘আমার ছেলের লাশটা অন্তত খুঁজে দেন’
'ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর অনেককে বলেছি এমনকি পুলিশকেও অনুরোধ করেছি কিন্তু কেউ আমার ছেলেকে খুঁজতে এগিয়ে আসেনি। কাউকে না পেয়ে ছেলেকে খোঁজার জন্য আমি নিজেই নালায় নামি,' কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন চট্টগ্রামে নালায় পড়ে নিখোঁজ শিশু কামালের বাবা মোহাম্মদ কাউসার।
পেশায় দিনমজুর কাউসার জানান, তার দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে কামাল সবার ছোট।
'আমার ছেলের লাশটা অন্তত খুঁজে দেন', বাবার কণ্ঠে আহাজারি।
নিখোঁজ কামালের বন্ধু রাকিবের সঙ্গে কথা হয়। বলে, গত সোমবার বিকেলে নালায় নেমে খেলতে গিয়ে হঠাৎ করেই কামাল হারিয়ে যায়।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামের রাস্তার পাশে মৃত্যুফাঁদ হয়ে ওঠা নালাগুলোর দুর্ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না বলে মনে করেন নগরীর বাসিন্দারা।
উদ্ধার অভিযানে আসা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, 'এই নালার গভীরতা ১০-১২ ফুট হলেও আবর্জনায় ঠাসা।'
নগরবিদরা মনে করছেন, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট না থাকার কারণে চট্টগ্রামের নালাগুলো বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে কেউ নালায় পড়ে গেলে মৃত্যুঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, 'সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় চট্টগ্রামের নালাগুলো এখন বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।'
'প্রথমত সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি নেই। যদি নালাগুলো পরিষ্কার থাকত সেক্ষেত্রে যে কোনো পয়েন্ট থেকে নিখোঁজদের দ্রুত উদ্ধার করা যেত,' তিনি বলেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের মাজার গেট এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সেহেরিন মাহবুদ সাদিয়া (১৯) নালায় পড়ে যান। নিখোঁজ হওয়ার সাড়ে চার ঘণ্টা পর তার মরদেহ পাওয়া যায়।
গত ২৫ আগস্ট চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় চশমা খালে পড়ে নিখোঁজ হন সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ।
গত ৩০ জুন শহরের ষোলশহর এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ড্রেনে পড়ে দুই জনের মৃত্যু হয়।
গতবছর নগরীর হালিশহর এলাকায় মহেশখাল খালে পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়।
Comments