ঈদযাত্রায় ‘নারকীয়’ পরিস্থিতি তৈরির শঙ্কা
এবারের রোজার ঈদে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে। ঢাকা থেকে ১ কোটির বেশি মানুষ বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এ ছাড়া এক জেলা থেকে আরেক জেলায় আরো প্রায় ৫ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে। এ অবস্থায় যানজটের পাশাপাশি বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে গণপরিবহনের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত না করতে পারলে নারকীয় পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত 'ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানী, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা' শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে উল্লিখিত তথ্যগুলো তুলে ধরে এই আশঙ্কার কথা বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিববহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ সংঘটিত হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সব রুটের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করা। কিন্তু যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারনে গণপরিবহনের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানী ঢাকার বাসিন্দারা যানজটের কারনে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে মন্তব্য করে মোজাম্মেল এই মুহূর্ত থেকে ঢাকার সব ফুটপাত ও সড়ক হকার এবং অবৈধ পার্কিংমুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান। তিনি বলেন, 'রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বার বিশেষ করে যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ, বাবুবাজার ব্রিজ, পোস্তগোলা, টঙ্গী রেলস্টেশন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু, মীরের বাজার, উলুখোলা, কাঞ্চন ব্রিজ, গাবতলী মাজার রোড, মীরের ধৌর, আশুলিয়া, ইপিজেড, চন্দ্রা, রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু, জিঞ্জিরা, কেরানীগঞ্জ, হাতিরঝিল, মহাখালী, রামপুরা, শেখের জায়গা, আমুলিয়া, ডেমরা, সুলতানা কামাল ব্রিজ, চিটাগাং রোড, কাচঁপুর, মদনপুর, মেঘনা টোল, ভুলতা, গাউছিয়াসহ বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকার কারনে উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যাতায়াতে মানুষজনকে অসহনীয় যানজটে পড়তে হবে।'
এ কারণে এসব জায়গার যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি প্রধান সড়কে রিকশা, ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মতো ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান মোজাম্মেল। না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত অবধি রাজধানী অচল হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য ও পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয় বলে দাবি করেন যাত্রী কল্যান সমিতির মহাসচিব। সেইসঙ্গে এবার সবগুলো রূটেই যানবাহনে ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কার কথাও বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, 'আগামী ২৫ রমজান থেকে ১৬ লাখ যাত্রীর গণপরিবহন সংকট দেখা দিবে। ছুটি বাড়িয়ে এটি সামাল দেওয়া যায়।'
Comments