করোনায় বিবর্ণ ঈদ
করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্টের চলমান মৃত্যুথাবার মধ্যেই আজ বুধবার সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। এমন এক সময় ঈদ ফিরে এলো যখন প্রায় প্রতিদিনই করোনায় মৃত্যুতে রেকর্ড হচ্ছে।
বাংলাদেশ এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে লড়ছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে গড়ে ২০০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে ‘কঠোর লকডাউন’ শিথিলের পর মানুষের চলাফেরা লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদুল আযহা উদযাপনের পর করোনায় মৃত্যু এবং শনাক্তের হার আরও বাড়ার আশংকা মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এদিকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে গণপরিবহনে গাদাগাদি করে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাজধানী ছেড়েছে।
হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আযহা উদযাপন করে থাকে। এই দিনটিতে হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজ পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দিতে মনস্থির করেন। কিন্তু সর্বশক্তিমান ও করুণাময় আল্লাহ হজরত ইসমাইল (আ.)-কে বাঁচিয়ে দেন। তার পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়।
এদিকে, করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে সরকার বিভিন্ন সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার ঈদুল আজহার নামাজের বিষয়ে কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, মসজিদে কোনো কার্পেট ব্যবহার করা যাবে না এবং নামাজের আগে মসজিদ জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মুসল্লিদের বাড়ি থেকে জায়নামাজ আনতে হবে। মুসল্লিদের অবশ্যই মসজিদের অভ্যন্তরে মাস্ক পরতে হবে। বাসা থেকে ওযু করে মসজিদে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মসজিদ বা ঈদগাহের ওযুর স্থানে সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং পানি রাখতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য নির্দেশনাবলী অনুসরণ করে মসজিদ বা ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায়ের সময় পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শিশু, অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ নিরুৎসাহিত করতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করতে হবে। সবাইকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নির্দেশ মেনে চলতে হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য মসজিদের ইমাম ও পরিচালনা কমিটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পশু কোরবানি দেওয়ার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে। স্থানীয় প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো, জনপ্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মী এবং মসজিদগুলোর পরিচালনা কমিটি এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে।
জাতীয় মসজিদে ঈদ জামাত
ঈদুল আজহার দিন সকাল ৭টা থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পাঁচটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। রোববার গণমাধ্যমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঈদের জামাতের সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায় এবং পরের জামাতগুলো যথাক্রমে, সকাল ৮টা, সকাল ৯টা, সকাল ১০টা এবং সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে।
Comments