কালোবাজার থেকে টিকিট কেনায় ৩ ট্রেন যাত্রীকে জরিমানা

কালোবাজারিদের কাছ থেকে ট্রেনের টিকিট কিনে রেল ভ্রমণ করলে ভ্রমণকারীকে অপরাধীদের সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
গতকাল শুক্রবার রেলের টিকিট কাউন্টার বা অনলাইন থেকে টিকিট না কাটায় অন্তত ৩ জন যাত্রীকে জরিমানা দিতে হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল জোনের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার আজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে কালোবাজার থেকে টিকিট কিনে যাত্রীদের ভ্রমণ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।'
গতকাল ঢাকা-রাজশাহীর মধ্যে চলাচলকারী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ঢাকা যাওয়ার সময় ৩ জন যাত্রী ফেসবুকে পোস্ট করে জানান, তারা কালোবাজার থেকে বাড়তি দামে টিকেট কিনে ভ্রমণ করছেন।
ওই ট্রেনেই ছিলেন অসীম কুমার। তিনি 'টিকিট যার ভ্রমণ তার' নামে একটি সচেতনতামূলক অভিযান চালাচ্ছিলেন।
এই ক্যাম্পেইনের আওতায় যাত্রীদেরকে নিজের জাতীয় পরিচয় (এনআইডি) ব্যবহার করে টিকিট কাটতে উৎসাহিত করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
তবে, ফেসবুকে পোস্ট করা ওই ৩ যাত্রীর কেউই টিকিট কেনার জন্য নিজেদের এনআইডি ব্যবহার করেননি। তাদের প্রত্যেকে পুনরায় ৪০০ টাকা দিয়ে নতুন করে টিকিট কাটতে বাধ্য হন।
জিএম বলেন, 'জরিমানা হিসেবে তাদেরকে নতুন টিকিট কাটতে হয়েছে।'
তিনি জানান, কালোবাজারিদের কাছ থেকে টিকেট কিনে অপরাধীদের সাহায্য করার অপরাধ তারা করেছেন।
রেলের জিএম ফেসবুক পোস্টেও বিষয়টি লিখেছেন এবং কমেন্টে অনেকের প্রশংসাও পেয়েছেন। একইসঙ্গে কালোবাজারিদের প্রতিহত না করে যাত্রীদের হয়রানি করার অভিযোগে সমালোচনার মুখেও পড়েছেন।
রাজশাহী রেলস্টেশনে আসা বেশ কয়েকজন যাত্রী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, শুক্রবার রাত পর্যন্ত কাউন্টারগুলোতে কোনো টিকিট ছিল না।
তারা বলেন, অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই কাউন্টার এবং অনলাইনে সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। রেল কর্তৃপক্ষের সহায়তা ছাড়া এমনটি অসম্ভব বলেও মনে করেন তারা।
আজ সকালে রাজশাহী রেলস্টেশনে দেখা যায়, লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটছেন যাত্রীরা।
৩ যাত্রীকে জরিমানা করার বিষয়ে তারা বলেন, এতে তো কালোবাজারিরা আরও উৎসাহ পাবে। তাদেরকে না ধরে বা টিকিট কালোবাজারে যাওয়া বন্ধ না করে উল্টো যাত্রীদের জরিমানা করার অর্থ নিশ্চিতভাবেই কালোবাজারিদের আরও উৎসাহ দেওয়া।
জিএম অসীম কুমার জানান, রেল কর্তৃপক্ষ ওই ৩ যাত্রীর কাছ থেকে কালোবাজার থেকে কেনা টিকিটগুলো জব্দ করেছে। কোন এনআইডি ব্যবহার করে টিকিটগুলো কেনা হয়েছে তা দেখা হবে এবং কারা টিকিট কিনেছেন তা নিশ্চিত করা হবে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে। এর মাধ্যমে কালোবাজারিদের শনাক্ত করা হবে।
তবে, গতকাল টিকিট জব্দ করা হলেও আজ দুপুর পর্যন্ত এই কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, 'এটা একটু কঠিন। এর জন্য সময় লাগবে। ঈদের ভিড় শেষ হলে কালোবাজারিদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করব।'
Comments