গরুর হাটে বাঁধা দেওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ

নোয়াখালীর কবিরহাটে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কোরবানির পশুর হাট বসাতে বাঁধা দেওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের ও গরু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।
আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামের চিরিঙ্গা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসিনা আক্তার পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও হাসিনা আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নির্দেশনা অমান্য করে গরুর হাট বসলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে পৌঁছে তা বন্ধ করে দেন। এতে বাজারের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটায়।’
গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
সূত্র জানায়, করোনা সংক্রমণ রোধে রোধে সরকার ১৪ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন ঘোষণা দেয়। এ সময় কোরবানির পশুর হাট বসা ও পশু ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু, সরকারি নির্দেশ না মেনে সোমবার দুপুরে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামের চিরিঙ্গা বাজারে গরুর হাট বসে।
খবর পেয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত দাস পুলিশসহ সরকারি গাড়ী নিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই গরুর হাটে যান এবং হাট বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
এ সময় চিরিঙ্গা বাজার পরিচালনা কমিটির সদস্যরা ও গরু বিক্রেতারাসহ উপস্থিত ক্রেতা-বিক্রেতারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ীতে হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে।
জানতে চাইলে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও চিরিঙ্গা বাজার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুল মান্নান গাড়ী ভাঙচুরের বিষয়টি স্বীকার করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গরু বাজারে ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে সামান্য ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। পরে, তা ঠিক হয়ে গেছে।’
কবিরহাট থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পশুর হাটে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হাট বন্ধ করতে বললে বাজারে উপস্থিত কয়েক হাজার লোক বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এসময় লোকজন ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।’
পরে, পুলিশ ও ইউএনও ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত দাসের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাঁন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে জেলার কোথাও গরুর হাট বসতে দেওয়া হচ্ছে না। কবিরহাটের চিরিঙ্গা বাজারে প্রশাসনের অগোচরে যারা গরুর হাট বসিয়েছে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি জানান, সোমবার দুপুরে সোনাইমুড়ী উপজেলার আমকি বাজারে গরু ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে জড় হলে খবর পেয়ে সেই বাজারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
Comments