ছোট শিশুটির সঙ্গে বিদায় নিয়েছে পরিবারের ঈদের আনন্দও

shihabs_family.jpg

শিহাবের পরিবারে ঈদের আনন্দ আর নেই। ছোট এই শিশুটি পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার পর পরিবারের স্বজনদের কাছে এবারের ঈদ এসেছে বিষাদের ডানায় ভর করে।

গত ২০ জুন টাঙ্গাইল শহরের সুপারিবাগান এলাকায় সৃষ্টি অ্যাকাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাস থেকে এই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিহাব মিয়ার (১১) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শিহাব সখীপুর উপজেলার বেরবাড়ি গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াস হোসেনের ছেলে।

shihab.jpg

পরিবারের অভিযোগ, শিহাবের মরদেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু বা আত্মহত্যার ঘটনা নয়। তাদের সন্তানকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

অন্যদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছাত্রাবাসের ৭ তলায় একটি বাথরুমে শিহাব ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আজ রোববার ঈদের দিন শিহাবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তান ও নাতির কথা মনে করে বারান্দায় বিলাপ করে কাঁদছেন শিহাবের মা ও দাদি।

কাঁদতে কাঁদতেই শিহাবের মা আসমা বেগম বলেন, '৩ বছর আগে একবার দেশে আসছিল শিহাবের বাপে। সেবারেই শিহাবের সঙ্গে ওর বাপের শেষ দেখা। গত কোরবানির ঈদে শিহাব ফোনে বাপেরে কইছিল যে সে একটা বড় গরু কোরবানি দিতে চায়। সেজন্য এইবার ওর বাপে আগেই ট্যাকা পাঠায়া দিছিলো। এইবার আমার শিহাব নাই, আমাগো ঈদও নাই।'

এই ঘটনায় গত ২৭ জুন আসমা বেগম সৃষ্টি স্কুলের ৬ আবাসিক শিক্ষককে আসামি করে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

শিহাবের মৃত্যুর পরের দিনই সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে আসেন শিহাবের প্রবাসী বাবা ইলিয়াস হোসেন। তার অভিযোগ, শুরু থেকেই সৃষ্টি স্কুলের প্রভাবশালী মালিকপক্ষ তদন্তকাজে প্রভাব খাটাচ্ছে।

এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিহাবের সহপাঠী, সৃষ্টি স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং টাঙ্গাইলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দাবি আদায়ে আমরা এবার কঠোর আন্দোলনে নামব।'

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেলোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, 'তদন্ত চলছে। প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Should we believe the mob has govt support?

BNP acting chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of Lal Chand, alias Sohag, due to its silent support for such incidents of mob violence.

50m ago