সড়ক দুর্ঘটনায় আইসিইউ চিকিৎসক আইসিইউতে
ডা. সামিনা আক্তার চট্টগ্রামের ইউএসটিসি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের আইসিইউর চিকিৎসক। আইসিইউর সংকটাপন্ন রোগীর জীবন বাঁচাতে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিন্তু গতকাল সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে তিনি নিজেই এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) ৫ম ব্যাচের এমবিবিএস ছাত্রী ছিলেন সামিনা। মঙ্গলবার রাতে রিকশায় করে চট্টগ্রাম মহানগরীর মেহেদীবাগ এলাকায় নিজের বাসায় ফিরছিলেন। রাত ৯টার দিকে কাজির দেউড়ি এলাকায় তার রিকশাকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করার পর তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
উদ্ধারকারীদের মধ্যে স্থানীয় শাহাদাত আলী সবুজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিকট শব্দ শুনে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। দেখি একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় এক নারী রিকশা থেকে ছিটকে পড়েছেন।'
'তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন। তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে একটি পরিচয়পত্র রাস্তায় পড়ে যায়। সেটি দেখে আমরা জানতে পারি সে ইউএসটিসির একজন ডাক্তার,' বলেন তিনি।
শাহাদাত বলেন, 'আমার এক আত্মীয় ইউএসটিসিতে কাজ করেন। আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে দুর্ঘটনার কথা বলি। তিনি ডা. সামিনাকে শনাক্ত করেন এবং তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।'
'আমরা তাকে দ্রুত চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাই এবং তাকে আইসিইউতে ভর্তি করি,' যোগ করেন তিনি।
শাহাদাত আরও বলেন, 'সেই রাতে আমরা তার জন্য ২ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করি। আমরা ভোর ৪টা পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলাম।'
যোগাযোগ করা হলে সামিনার ভাতিজি নানজিবা ডেইলি স্টারকে জানান, তার ফুপু ইউএসটিসিতে এমবিবিএসের ৫ম ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের আইসিইউতে যোগ দেন।
তিনি বলেন, 'ফুপু এখন আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে অচেতন আছেন। তিনি আইসিইউতে শতাধিক মানুষের জীবন বাঁচাতে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি নিজেই আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।'
যোগাযোগ করা হলে, চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী ডেইলি স্টারকে জানান, সামিনার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত একাধিক আঘাতের চিহ্ন আছে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন জানান, পুলিশ সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিকে আটক করলেও, চালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
Comments