পদ্মার ভাঙন-ঝুঁকিতে হরিরামপুরের সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসহ শতাধিক বাড়িঘর

পদ্মা নদীর ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শতাধিক বাড়িঘর। ইতোমধ্যেই নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধের কয়েকটি স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়াসহ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হলে অসংখ্য স্থাপনা ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হবে বলে জানান স্থানীয়রা।
সংরক্ষণ বাঁধের কয়েকটি স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। ছবি: স্টার

পদ্মা নদীর ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শতাধিক বাড়িঘর। ইতোমধ্যেই নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধের কয়েকটি স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়াসহ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হলে অসংখ্য স্থাপনা ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হবে বলে জানান স্থানীয়রা।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফ্লাড অ্যান্ড রিভার ব্যাংক ইরোশন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিও ব্যাগ ফেলে নির্মাণ করা হয় রামকৃষ্ণপুর থেকে মির্জানগর পর্যন্ত আট দশমিক আট কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা নদীর তীর রক্ষা বাঁধটি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে তিনটি গুচ্ছে (প্যাকেজ) নির্মিত এই বাঁধে ব্যয় হয় ১১৭ কোটি টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আন্ধারমানিক, বকচর ও খালপাড় বয়রা এলাকায় বাঁধের বালু ভর্তি জিও ব্যাগগুলো ধসে নদীতে চলে গেছে। নদী তীরের বেশ কিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে বাঁধ সংলগ্ন উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স, হরিরামপুর থানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা ডাকবাংলো, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবন ও বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় আন্ধারমানিক বাজারসহ অসংখ্য বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১০টিই পদ্মা নদীর ভাঙনে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে আজিমনগর, গোপীনাথপুর, রামকৃষ্ণপুর, লেছড়াগঞ্জ, কাঞ্চনপুর, সূতালড়ি, ধূলশুড়া ও হারুকান্দি ইউনিয়নের অনেক এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ বছর নদীতে পানি বাড়ার কারণে নতুন করে কাঞ্চনপুর, ধূলশুড়া, কাঞ্চনপুর ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ভাঙন শুরু হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নেও কমবেশি ভাঙন শুরু হয়েছে। পদ্মার ভাঙনে উপজেলার চার ভাগের তিন ভাগ ভূ-খণ্ডই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পর নদীর তীর রক্ষা বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। বালু ভর্তি জিও ব্যাগ না দিয়ে সিসি ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হলে ধসের ঘটনা ঘটতো না।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই নদীতে চলাচলকারী ইঞ্জিনচালিত নৌকার চালকদের অসচেতনতার কারণে বাঁধটি ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে। বাঁধে নোঙর করানোর কারণে জিও ব্যাগগুলো ছিঁড়ে গিয়ে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া, নদী তীরবর্তী কেউ কেউ জিও ব্যাগ কেটে বাড়িতে নিয়ে যান। বাঁধের ধস রোধে জরুরি ভিত্তিতে সেখানে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পাউবোকে অনুরোধ করা হয়েছে।'

মানিকগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাঁধে ধসে যাওয়া অংশে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয় হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে। কাজটি ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে ব্যাগ ফেলা সম্পন্ন হবে। এতে নদীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে ওইসব এলাকা।'

Comments

The Daily Star  | English

World will know Bangladesh through sports: PM

Prime Minister Sheikh Hasina today asked the authorities concerned to promote domestic sports of the country alongside other games

49m ago