পহেলা বৈশাখে ইলিশের চাহিদা কম বরিশালে
প্রতিবছর বাংলা বর্ষবরণের একটি বড় অনুষঙ্গ পান্তা-ইলিশ। তাই অন্য সময়ের তুলনায় এ সময়ে ইলিশের চাহিদা বেশি থাকে। কিন্তু, বরিশালে এবার ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। চাহিদা কম থাকায় জেলার মোকামগুলোতে অন্যবারের তুলনায় ইলিশের সরবরাহ অনেক কমেছে।
বরিশালের ইলিশ ব্যবসায়ীরা জানান, আগে পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে বরিশালের বাজারে প্রতিদিন হাজার মণ ইলিশ বেচাকেনা হতো। কিন্তু, চাহিদা কম থাকায় বর্তমানে তা এখন ১০০ মণে দাঁড়িয়েছে। যা অন্যান্যবারের তুলনায় দশ ভাগের এক ভাগ। আবার দামও অন্যবারের চেয়ে অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ কম।
বরিশালে ইলিশের সবচেয়ে বড় মোকাম পোর্ট রোড ইলিশ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, রোজার কারণে বাজারে ইলিশের চাহিদা কম থাকায় সরবরাহ অনেক কমেছে। গত ৭ দিনে বরিশাল থেকেই ৫০-৬০ কোটি ইলিশ বিক্রির কথা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তা হয়েছে ১০ ভাগের এক ভাগ।
ইলিশের পাইকারি ব্যবসায়ী আনিস শিকদার জানান, ৮০০ গ্রামের ইলিশ ৫২ হাজার টাকা মণ এবং ১ কেজির ওপরে ৬০-৬৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ২৫-৩০ শতাংশ দাম বেড়েছে।
তবে, এই দাম বৃদ্ধি বিগত বছরের পহেলা বৈশাখের সময়ের দামের চেয়ে অন্তত ৫০ শতাংশ কম। বর্তমানে ১ কেজির ওপরের মাছ ১ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে, আগে একই সময়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা দরেও বিক্রি হয়েছিল।
বরিশালে পোর্ট রোড ইলিশ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নীরব হোসেন টুটুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '২ বছর আগে এ সময়ে ইলিশ বিক্রি হতো আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা কেজি। কিন্তু, এখন রমজানের সময় চাহিদা কম থাকায় ইলিশের দাম বাড়েনি। এখন প্রতিদিন ১০০ মণের চেয়ে কম ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, '২ বছর আগেও পহেলা বৈশাখে বরিশাল অঞ্চলের মোকাম থেকে অন্তত ২০০ কোটি টাকার ইলিশ ঢাকার বাজারগুলোতে যেত। তবে, তা অনেক কমেছে।'
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, 'এবার রমজানের কারণে ইলিশের চাহিদা কম। তাছাড়া বর্তমানে ইলিশের ৬টি অভয়াশ্রমে ইলিশ ধরার ওপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ কারণে ইলিশের সরবরাহও কম।'
ইলিশ ব্যবসায়ী ইউসুফ শিকদার বলেন, 'পহেলা বৈশাখে ইলিশ বেচাকেনায় নিষেধ নেই। রমযানের কারণে বিক্রি কমে গেছে। যদিও পহেলা বৈশাখের আগে সামান্য দাম বেড়েছে। কিন্তু, অন্যান্য বছর এ সময়ে ইলিশের দাম কয়েক গুণ বেড়ে যায়।'
Comments