বন্যায় পশু খাদ্য সংকটে কমে গেছে গরু-ছাগলের দাম

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর চর ও তীরবর্তী গ্রামগুলোয় ঘাসের জমি বন্যায় তলিয়ে যাওয়ায় পশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
কেউ কেউ টাকা দিয়ে পশু খাদ্য কিনে গরু-ছাগল পালন করলেও অধিকাংশ বন্যাদুর্গত কৃষক তা পারছেন না। তারা বাধ্য হয়ে স্থানীয় হাট-বাজারে কম দামে গবাদি পশু বিক্রি করে দিচ্ছেন।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না গ্রামের বন্যাদুর্গত কৃষক মেছের আলী (৫৮) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ছয়টি ছাগল, চারটি গরু ছিল। বন্যায় পশু খাদ্য সংকটের কারণে তিনটি ছাগল ও একটি গরু কম দামে বিক্রি করে দিয়েছি।'
একই গ্রামের বন্যাদুর্গত কৃষক নজরুল ইসলাম (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাতটি ছাগলের মধ্যে তিনটি আর পাঁচটি গরুর মধ্যে দুইটি কম দামে বিক্রি করে দিয়েছি। ইচ্ছা না থাকলেও বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।'
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ গ্রামের বন্যাদুর্গত কৃষক নাদের আলী (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চারটি ছাগল ও দুইটি গরু কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া, ১০টি হাঁস-মুরগি বন্যায় ভেসে যাওয়ায় ২৫টি হাঁস-মুরগিও কম দামে বিক্রি করেছি। সেই টাকায় পরিবারের লোকজনের খাবার ও বাকি পশুর খাদ্য কিনেছি।'
চিলমারী উপজেলার চর অষ্টম গ্রামের বন্যাদুর্গত কৃষক সামাদ মিয়া (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাড়ি-ঘর থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। কিন্তু, আশেপাশে ঘাসের জমিগুলো এখনো পানির নিচে। পশু খাদ্যের তীব্র সংকট থাকায় তিনটি ছাগল ও দুইটি গরু কম দামে বিক্রি করেছি।'
'চড়া দামে পশু খাদ্য কিনতে হচ্ছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এখন আটটি ছাগল ও ছয়টি গরুর খাবার যোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।'
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর হাটের পশু ব্যবসায়ী আক্কাস আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক মাস আগের চেয়ে এখন হাটে গরু প্রতি দাম কমেছে আট হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা। ছাগলের দাম কমেছে এক হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা।'
এ ছাড়া, হাঁস-মুরগির দামও কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আগামী এক মাস পশুর বাজার এরকম থাকতে পারে।'
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল হাই সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিবছর বন্যার সময় কৃষকরা গবাদি পশু-পাখি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন। বন্যায় অধিকাংশ জমির ঘাস নষ্ট হয়ে যায়। সেসময়ে গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগির দাম একটু কমে যায়।'
Comments