গার্মেন্টস খোলার ঘোষণা

বরিশাল থেকে ঢাকামুখী মানুষের স্রোত!

বরিশাল থেকে ঢাকামুখী পোশাকশ্রমিকদের ভিড়। ছবি: টিটু দাশ/স্টার

গার্মেন্টস খুলে দেওয়ার ঘোষণায় বরিশাল থেকে পোশাকশ্রমিকরা যে যেভাবে পারছেন ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। রিকশায়, ভ্যানে, পায়ে হেঁটে, ট্রাকে বা ট্রলারে—বিভিন্ন যানবাহনে করে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা।

আজ শনিবার সরেজমিনে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

লকডাউনের কারণে নৌ ও সড়ক পথে যান চলাচল বন্ধ তাকার কথা। কিন্তু, আজ সকালে বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায় রাজধানীমুখী পোশাকশ্রমিকদের ভিড়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সেই ভিড়ও।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই বাস টার্মিনাল হয়ে অন্তত এক লাখ মানুষ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

দুই শিশু সন্তান নিয়ে মেহেন্দীগঞ্জ থেকে বরিশাল শহরে এসেছেন মঞ্জু বেগম। ট্রলারে করে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে বরিশালে এসেছেন। এরপর রিকশায় এসেছেন নথুল্লাবাদ। সেখান থেকে উঠেছেন ভ্যানে। কারণ, কাল থেকে তার অফিস খোলা। যেভাবেই হোক আজ তিনি ঢাকা যাবেনই।

'আগামীকাল গার্মেন্টস খুলে দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। এখন যেভাবেই হোক আমাকে ঢাকায় যেতে হবে। দরকার হলে হেঁটেই ঢাকা যাব', দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন মঞ্জু।

হাবিব নামে আরেক গার্মেন্টসকর্মী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ট্রলারে করে মেঘনা পাড়ি দিয়েছি। এখন মোটরসাইকেলে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবো।'

বরিশাল থেকে ঢাকামুখী পোশাকশ্রমিকদের ভিড়। ছবি: টিটু দাশ/স্টার

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, একদিকে সড়কে রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, অন্যদিকে ঢাকামুখী মানুষের এই ভিড়। যে যেভাবে পারছেন, রওনা দিচ্ছেন ঢাকার উদ্দেশে।

আসিফুল নামে এক পোশাকশ্রমিক বলেন, 'বাসসহ কোনো গণপরিবহন না থাকায় দ্বিগুণ অর্থ খরচ করে বাকেরগঞ্জ থেকে বরিশালে এসেছি। এখন এখানে এসে কোনো যানবাহন না পেয়ে বিপাকে পড়েছি। তবে, যেভাবেই হোক ঢাকায় তো যেতে হবে।'

গণপরিবহন বন্ধ রেখে গার্মেন্টস খোলার প্রতিবাদে এক পর্যায়ে ঢাকামুখী পোশাকশ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে চলাচলরত পণ্যবাহী ট্রাকের পথরোধও করেন। খবর পেয়ে বিমানবন্দর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল স্বাভাবিক করে।

বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপ্লব বড়ুয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নথুল্লাবাদসহ আমাদের থানার আওতাধীন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।'

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম শামীম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা কোনো ধরনের গণপরিবহন সড়কে চলতে দিচ্ছি না। এরপরেও কেউ যদি যেতে চায়, তাহলে কীভাবে তাদের আটকাব? নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে মাত্র চার জন ট্রাফিক পুলিশ রয়েছে। এই সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে কি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?'

'আমাদের দৃষ্টির বাইরে যে যেই পরিবহন পাচ্ছে, সেভাবেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। এসব কারণে আমরা কিছু থ্রি-হুইলার আটকালেও থামানো মানুষকে থামানো যাচ্ছে না। গার্মেন্টস খুলে দেওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে', বলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English

Polls no later than June 2026

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus has said that next national polls will be held within June 2026.

8h ago