মানিকগঞ্জের সড়ক-মহাসড়ক-বাজারে অবাধ চলাচল বেড়েছে

ব্যাংক-বীমা খোলা থাকায় এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। ছবি: জাহাঙ্গীর শাহ/স্টার

মানিকগঞ্জের করোনা পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১৯ জন। যা জেলায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা। এরপরেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়নি। জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে মানুষের অবাধ চলাচল বেড়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা শহর, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, বাজারসহ আশেপাশের এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, মানুষের চলাচলের পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচল বেড়েছে। সাধারণ মানুষ লকডাউনের বিধিনিষেধ মানছেন না। বিধিনিষেধ কার্যকরে প্রশাসনের তৎপরতাও চোখে পড়েনি। অন্যান্য দিন সড়ক-মহাসড়কে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেলেও আজ তা চোখে পড়েনি।

জেলা শহরের শহীদ রফিক সড়ক, শহীদ সরণি সড়ক ও গার্লস স্কুল সড়কে রিকশা, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। মানুষ অবাধে চলাফেরা করছেন। কিন্তু, তাদের কারো কারো মুখে মাস্ক ছিল না।

এছাড়া, বিভিন্ন শপিং মল, বিপণিবিতান ও দোকানের অর্ধেক সাটার খুলে দোকানিরা সড়কের পাশে বসে আছেন। ক্রেতাদের ডাকাডাকি করে দোকানের ভেতরে নিয়ে পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, 'আর কতদিন দোকানপাট বন্ধ রাখবো? আমাদের পরিবার আছে, সংসার আছে। সংসারের খরচ তো থেমে নেই।'

আরেক পোশাক ব্যবসায়ী বলেন, 'হাত খালি, সংসারের বাজার-সদাই করতে হইবো। যদি দুই-চারটা জামা বেচতে পারি। তাতেও বাজার-সদাইয়ের টাকাটা পামু।'

ব্যাংক ও বীমা খোলা থাকায় এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাক, ইসলামী ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকসহ আরও বেশ কয়েকটি ব্যাংকে গ্রাহকদের ভিড় দেখা গেছে।

কাঁচাবাজারেও স্বাভাবিক সময়ের মতোই ক্রেতাদের কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।

এ দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বাস ছাড়া সবধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, রিকশা, রিকশা-ভ্যান, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসে করে যাত্রীরা যাতায়াত করছেন।

এদিকে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালেও রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) কাজী এ কে এম রাসেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ সকাল ১১টা পর্যন্ত হাসপাতালে ৩১৩ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তাদের মধ্যে করোনা ওয়ার্ডে করোনা পজিটিভ রোগী ১৪৯ জন এবং আইসোলেশনে ১৬৪ জন।'

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, 'লকডাউন দিলেই তো হবে না, বিধিনিষিধ পুরোপুরি মেনে চলা অপরিহার্য। জেলা করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে। তারপরও প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে রাস্তাঘাটে মানুষ অবাধ চলাফেরা করছে। এতে সংক্রমণ আরও বাড়ছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তবে ঘরের বাইরে না বের হওয়াটাই শ্রেয়।'

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি আগস্টের পাঁচ দিনে জেলায় ১ হাজার ৯৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্তের হার ৪৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ ছাড়া এই পাঁচ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।

Comments

The Daily Star  | English
10-bed ICU

Life-saving care hampered in 25 govt hospitals

Intensive Care Units at 25 public hospitals across the country have remained non-functional or partially operational over the last few months largely due to a manpower crisis, depriving many critically ill patients of life-saving care.

10h ago