রাখালের উচ্চশিক্ষার পথে বাধা দারিদ্র্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েও দারিদ্র্যের কারণে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন রাখাল চন্দ্র রায়। তিনি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম ভেলাবাড়ি গ্রামের বর্গাচাষি উকিল চন্দ্র রায় ও সুমিত্রা রানী রায়ের ছেলে।
ঢাকায় যাতায়াত, ভর্তি আর সেখানে থাকা-খাওয়ার খরচ তার বর্গাচাষি বাবার পক্ষে বহন করা সম্ভব নয় বলে চরম দুশ্চিন্তা ও হতাশায় দিন কাটছে মেধাবী এই শিক্ষার্থীর।
ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় তার অবস্থান ৫৫০।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন রাখাল চন্দ্রের ছোটবেলা থেকে। কিন্তু, সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন।
স্কুলজীবন থেকেই মেধাবী ছাত্র রাখাল চন্দ্র রায়। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিলেন। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় পেয়েছেন জিপিএ-৫। সংসারে চরম আর্থিক কষ্টের সঙ্গে লড়াই করে তাকে পড়াশুনা করতে হচ্ছে।
রাখাল চন্দ্র রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি স্কুলে পড়াকালে স্বপ্ন দেখতাম একদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। অর্থের অভাবে স্বপ্নকে বাস্তব করতে পারছি না।'
'জমি বর্গাচাষ করে বাবা সামান্য আয় করেন। তার আয়ে সংসার চলছে কোনো রকমে। জানি না কী হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবো কি না তা অনিশ্চিত,' যোগ করেন তিনি।
রাখালের মা সুমিত্রা রানী রায় ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ছেলের পড়াশুনায় আর্থিক সহায়তা করতে না পেরে খুব কষ্ট লাগছে। সংসারের অবস্থাও ভালো না। রাখাল ঠিকমতো খাওয়া-নাওয়া করছে না। আমাদেরও স্বপ্ন রাখাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু, দারিদ্র্য তাকে হতাশার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।'
রাখালের বাবা উকিল চন্দ্র রায় ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিরুপায় হয়ে আছি। কোনভাবেই ছেলের ভর্তিসহ অন্যান্য খরচ বহনে টাকা জোগাড় করতে পারছি না। কিছু নেই যে তা বিক্রি করবো।'
Comments