কে কী বললো সেদিকে আমাদের খুব বেশি নজর দিতে হবে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি মনে করি আমাদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা প্রত্যেকে স্ব স্ব অবস্থানে দায়িত্ব পালন করছেন বলেই কিন্তু আমরা অনেক দেশের থেকে ভালো অবস্থানে এগিয়ে যাচ্ছি।
pm_23jul22.jpg
ছবি: সংগৃহীত

প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি মনে করি আমাদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা প্রত্যেকে স্ব স্ব অবস্থানে দায়িত্ব পালন করছেন বলেই কিন্তু আমরা অনেক দেশের থেকে ভালো অবস্থানে এগিয়ে যাচ্ছি।

আজ শনিবার সকালে জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন ও বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। সেই অবস্থায় আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতিটা অব্যাহত রাখতে পেরেছি।

তিনি বলেন, আজকে করোনাভাইরাস মোকাবিলা, তার ওপর আরেকটা আঘাত এলো ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। যুদ্ধের পাশাপাশি আমেরিকা রাশিয়ার ওপর দিলো নিষেধাজ্ঞা। সবাই এখন ভুক্তভোগী। এই একটা সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের সার, খাদ্য, জ্বালানি তেল কেনা—সব ক্ষেত্র বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শুধু আমরা না, পুরো বিশ্বই একটা দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছে। এটা হলো বাস্তবতা। আমি মনে করি, কেউ যদি মনে করেন স্যাংশন দিলেই একটা দেশকে শিক্ষা দেওয়া গেল, সেটা দিতে যেয়ে সবাই কিন্তু সেই শিক্ষা ভোগ করছে। সেই শিক্ষায় সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের দেশে যেমন মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, উন্নত দেশগুলোতে অনেক বেশি মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা শুধু আমরা বলছি না, উন্নত দেশগুলো সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে যে বিদ্যুৎ সাশ্রয় তাদের করতে হবে। আমি উন্নত দেশগুলোর কথাই বেশি বলবো, আমরা তো অনেক দূরে রয়ে গেছি। তাদের অবস্থাই এই ধরনের করুণ। সেখানে আমরা কোথায়! তার পরেও আমি মনে করি, আমাদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা প্রত্যেকে স্ব স্ব অবস্থানে দায়িত্ব পালন করছেন বলেই কিন্তু আমরা অনেক দেশের থেকে ভালো অবস্থানে এগিয়ে যাচ্ছি। তবুও ভবিষ্যত চিন্তা করে আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। অহেতুক যেন অপচয় না হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।

আমি জানি, এ ক্ষেত্রে আমাদের হয়তো পত্র-পত্রিকা নানা কথা লিখবে, টক শোতে অনেক কথা বলবে। বিরোধী দলরা কথা বলবে। বিরোধী দলরা বলবেই, বলাই তাদের কর্তব্য; তারা বলে যাক। আমাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে আমরা সঠিক পথে আছি কি না, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছি কি না, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি কি না এবং দেশের সাধারণ মানুষ গ্রামের তৃণমূল মানুষটা সেবা পাচ্ছে কি না। আমরা যদি সেভাবে চিন্তা করি, কে, কী বললো সেদিকে আমাদের খুব বেশি নজর দিতে হবে না। কে কী বললো সেটা শুনে হয়তো আমরা দেখতে পারি আমাদের কোনো ঘাটতি আছে কি না। সেটুকু আমরা নেব কিন্তু ওই কথায় যেন কেউ বিভ্রান্ত না হন, নিজেরা যেন হতাশ না হন। কেউ হতাশাগ্রস্ত যেন না হয়ে পড়েন আমি সেদিকে সবাইকে সচেতন থাকতে বলবো। হতাশ হওয়ার মতো কিছু নেই। যখন যে অবস্থা হবে, সে অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই আমাদের চলতে হবে। তারপরও আমাদের যতটুকু নিজেদের ব্যবস্থা আছে সেটা নিয়েই আমরা চলবো, বলেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রশাসনে যারা দায়িত্বরত যারা জনগণের সেবা দেবেন তাদের যেসব সমস্যাগুলো আগে ছিল সেগুলো দূর করতে আমরা বিশেষভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। সংসারের চিন্তা অনেকটা লাঘব করে দিয়ে জনগণের চিন্তা যাতে করতে পারে, সেই সুযোগটা যাতে সৃষ্টি হয় সেই ব্যবস্থাটা আমি নিয়েছি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে চাই না, কী করেছি; যাদের দিয়ে দায়িত্ব পালন করাবো তারা যেন মন-প্রাণ ঢেলে জনগণের সেবা করতে পারে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল আর সেভাবেই চেষ্টা করে গেছি।

প্রত্যেকটা কাজে জবাবদিহিতা থাকা উচিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্ম সম্পাদন চুক্তির যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাতে আমি মনে করি, আমরা যেসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছি সেগুলো বাস্তবায়ন করা অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে।

Comments