দলীয় কোন্দলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার হাতের রগ কাটার অভিযোগ
দলীয় কোন্দলের জেরে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাতুল চৌধুরীর (২৯) ২ হাতের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে পৌর শহরের পাতারহাট বন্দরের গরুর হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
রাতুলের স্বজনরা জানিয়েছেন, আহত রাতুলকে উদ্ধার করে রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে, তার অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথের অনুসারীরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খান।
স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ ও পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খানের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। রাতুল পৌর মেয়র ও আ. লীগ নেতা চৌধুরী কামাল উদ্দিন খানের সমর্থক।
কামাল উদ্দিন খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্থানীয় সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথের অনুসারীরা রাতুলকে নির্মমভাবে কুপিয়েছে। পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাতুল।'
পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'সোমবার রাত ৮টার দিকে রাতুল পাতারহাট বন্দরের উত্তরের বাজারে একটি ফার্নিচারের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় সংসদ সদস্যের সমর্থকরা দোকানে হামলা করে। তারা রাতুল চৌধুরীর ২ হাতের রগ কেটে দিয়েছে এবং মাথাসহ শরীরের একাধিক জায়গায় কুপিয়েছে। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এর আগে ২০০০ সালেও তারা রাতুলের ওপর হামলা করেছিল।'
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, 'রাতুল একজন বখাটে যুবক। সে প্রায়ই মাদকাসক্ত থাকে। এর আগেও অনেক অপরাধের সঙ্গে সে জড়িত ছিল। তাকে একবার কারাগারেও যেতে হয়েছে। কিছুদিন আগে সে মেহেদী নামের একটি ছেলেকে মারধর করেছে। আমি জানতে পেরেছি সেই ঘটনার জেরে রাতুলের ওপর হামলা হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। আমারও কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কেন আমাকে জড়ানো হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। আমি এসবের কিছু জানিও না।'
সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথের অনুসারী মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, 'চরহোগলা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সোমবার সন্ধ্যার পর মেহেদী হাসান নামে এক যুবকের ওপর হামলা করে রাতুল চৌধুরী ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনার জের ধরে রাতে রাতুলের ওপর তারা হামলা করে।'
খোরশেদ আলম দাবি করেন, 'এ ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।'
মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাতুলের হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পৌর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'
Comments