শনিবার সারা দেশে যুবদলের বিক্ষোভ

বিএনপি নেতা-কর্মীদের হত্যা আ. লীগের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের জীবন কেড়ে নেওয়াই যেন এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি বলে মন্তব্য করেছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

রিজভী বলেন, গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী একটি দুর্বৃত্তপরায়ন সরকার আজ রাষ্ট্রক্ষমতায় গেঁড়ে বসেছে। এরা ক্ষমতাসীন থাকার কারণেই আজ বাংলাদেশ যেন একটি মৃত্যুপরীতে পরিণত হয়েছে। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রান্ধুনীবাড়ী এলাকায় গতকাল রাত পৌনে ৮টার যুবদল নেতা আকবর আলীকে গুলি করে হত্যা করেছে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা। আওয়ামী সন্ত্রাসী সেলিম ও মাসুদ নিজেদের অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় এমপি ও সেখানকার আওয়ামী দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত এবং ঠান্ডা মাথার খুন।

তিনি বলেন, নিজস্ব সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিরোধী দল তথা বিএনপি নেতা-কর্মীদের দুনিয়া থেকে বিদায় করা শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির নমুনা। সারা দেশে জনপদের পর জনপদে আওয়ামী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অস্ত্র সজ্জিত করা হয়েছে এবং উজ্জীবিত করা হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতকে নিশ্চিহ্ন করতে। আর সেজন্যই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গ্রাম থেকে শহরে খুনের নেশায় ছুটে বেড়াচ্ছে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের জীবন কেড়ে নেওয়াই যেন এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি।

রিজভী আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেবলমাত্র সিরাজগঞ্জ জেলাতেই বিএনপির বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে ক্রসফায়ারে নির্বিচারে হত্যা করেছে। খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বিএনপির সমাবেশে সশস্ত্র হামলা, গুলি করে বিএনপি নেত্রীর চোখ অন্ধ করে দেওয়াসহ বিএনপির কার্যালয়ে উপর্যুপুরী হামলায় অসংখ্য নেতা-কর্মীকে আহত করে পঙ্গু করার ঘটনা ঘটছে অহরহ সিরাজগঞ্জে। সিরাজগঞ্জ এখন আর একটি রক্তাক্ত জনপদে পরিণত হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, বিএনপি নেতারা রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করছে। তথ্যমন্ত্রী যেন আওয়ামী লীগের ইভিএমের ভূমিকা পালন করছে। যে প্রতীকেই বোতাম চাপ দেওয়া হোক না কেন তা যেমন নৌকায় চলে যায়, ঠিক তেমন সারা দেশে নিজেদের পাহাড়সম অপকর্মের দিকে না তাকিয়ে, অনর্গল মিথ্যা বলে যাচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী।

এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বিএনপি নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ গুমের শিকার, সব মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মী আওয়ামী শাসনামলে হত্যার শিকার হয়েছেন। শাসকগোষ্ঠী এক বর্বর হিংসাযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে জনগণকেই প্রতিপক্ষ বানিয়েছেন। এই অনাচার ও রক্তাক্ত সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা কি রাষ্ট্রদ্রোহিতা? আওয়ামী নেতাদের কাছে অহং ও ক্ষমতালিপ্সা বাংলাদেশের চেয়েও প্রিয়। তবে আপনার (তথ্যমন্ত্রী) কথা যে নির্জলা মিথ্যাচার এটি সবাই জানে। আপনাদের হত্যা ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে রাগ, ঘৃণা ও প্রতিবাদের আগ্নেয়গিরি হয়ে আছে এ দেশের জনগণ। সময় অত্যাসন্ন, ভোট ডাকাতি, গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যা, লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করা, রাষ্ট্রীয় কাঠামো তছনছ করে দেওয়ার সঠিক বিচার একদিন এ দেশের মাটিতে হবেই, বলেন রিজভী।

যুবদল নেতা আকবর আলীকে হত্যার প্রতিবাদে আগামী শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব।

Comments

The Daily Star  | English

Can't afford another lost decade for education

Whenever the issue of education surfaces in Bangladesh, policymakers across the political spectrum tend to strike a familiar chord. "Education is our top priority," they harp

4h ago