‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে’

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের যে ধারা চলমান রয়েছে তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নবনির্মিত ১২ তলা ভবন 'বিজয় ৭১' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর তথা বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য থেকে মুক্ত এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সোপান হিসেবে দেখতে চাইলে সর্বক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। সর্বক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব রাষ্ট্রের সব অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের হলেও বিচার বিভাগ এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। সে কারণে নব্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর কাল বিলম্ব না করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার বাতিঘর স্মরূপ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা করেন এবং এই কোর্টকে তিনি সাংবিধানিকভাবে বিশেষ মর্যাদার স্থান দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আন্তরিকতায় এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, প্রশাসন ও আইনজীবীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিকশিত হয়ে আজ শক্তিশালী ও সুমহান প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছে ন্যায় বিচারের বাণী। অবদান রাখছে সামাজিক শান্তি ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায়। কোনো প্রতিষ্ঠানের উন্নতি ও সাফল্য নির্ভর করে মূলত সেই প্রতিষ্ঠানের সততা, কর্মদক্ষতা, সক্ষমতা ও সেবার মানের উপর। এই বাস্তবতার নিরীখে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টসহ গোটা বিচার বিভাগের কর্মদক্ষতা, সক্ষমতা এবং বিচার সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বাস্তবমুখী বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে—বলেন আইনমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, মানসম্মত বিচারের জন্য বিচারকদের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও আর্থিক সচ্ছলতা একটি নিয়ামক ভূমিকা পালন করে। সেজন্য বিচারকদের আর্থিক সুবিধাসহ নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা ও বিচারিক কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সরকার সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ফলে বিচারকরা স্বাধীনভাবে ন্যায় বিচার প্রদান করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জেল হত্যা মামলা, ১৯৭১ এর মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল মামলার বিচার করে দেশ থেকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করতে সক্ষম হয়েছেন; পঞ্চম ও সপ্তম সংবিধান সংশোধন আইন বাতিলের সাহস দেখিয়েছেন।

আইনজীবীরা বিচার বিভাগের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদেরকে বিচ্ছিন্ন রেখে বা পেছনে ফেলে বিচার বিভাগের পুরোপুরি উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়। সে কারণে আইনজীবীদের পেশাগত মান উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ১১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবন নির্মাণ করে দিয়েছে। অধিকন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে আপনার সরকারই প্রথম আইনজীবীদের জন্য ২০ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছে, বলেন তিনি।

আনিসুল হক বলেন, এসব যুগান্তকারী ও বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেওয়ার ফলে বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের কর্মদক্ষতা, সক্ষমতা ও সেবার মান অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সে জন্য আমরা এখন আশাবাদী, সুপ্রিম কোর্টে বিচারপ্রার্থী জনগণ দ্রুত ন্যায়বিচার পাবেন এবং এর মাধ্যমে সেখানে মামলা জট কমে আসবে। আমরা এটাও আশ্বস্ত করতে পারি যে, বঙ্গবন্ধুর ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী এবং গণমানুষের বিশ্বাস, আস্থা ও নির্ভরশীলতার আশ্রয়স্থল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের যে ধারা চলমান রয়েছে তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English

Advisory council clears anti-terrorism law amendement

Draft includes provision to ban an entity's activities, restrict terrorism-related content online

1h ago