রাস্তা ফাঁকা, ঈদ যাত্রায় স্বস্তি
ঈদ মানেই বাড়ি ফেরা। আগামী মঙ্গলবার ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে সারাদেশের মানুষ বাড়ি ফিরছেন। তবে এবার ছুটি একটু লম্বা হওয়ায় ঈদের একদিন হাতে রেখেই বেশিরভাগ মানুষ বাড়ি পৌঁছে গেছেন।
ইতোমধ্যে গত ৪ দিনে ৭৩ লাখ সিম ব্যবহারকারী ঢাকা ছেড়েছেন বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী জানিয়েছেন।
গত কয়েকদিনে সড়ক-মহাসড়ক ও নৌপথে দুর্ভোগ-যানজটের খবর পাওয়া গেলেও আজ রোববার রাস্তায় যারা আছে, তারা বেশ স্বস্তিতেই ভ্রমণ করছেন বলে জানা গেছে।
রোববার বিকেলের পর থেকে সড়ক-মহাসড়ক বেশ ফাঁকা এবং যাত্রীর ভিড় নেই বলে দ্য ডেইলি স্টারের সাভার, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, কুমিল্লা প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
সাভার
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ সাভারের সড়কগুলোতে যাত্রীর চাপ নেই, সড়কগুলোতেও যানবাহনের চাপ নেই বললেই চলে।
পুলিশ জানিয়েছে, পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ার পর শ্রমিকরা শনিবার রাতেই বাড়িতে ফিরেছেন। এ কারণে গত রাতে সাভারের সড়কগুলোতে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেশি ছিল।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাভারের সড়কগুলোতে আজ সকাল থেকেই যাত্রী ও পরিবহনের চাপ কমে গেছে। আমিনবাজার থেকে চন্দ্রা ও নবীনগর থেকে ধামরাই পর্যন্ত আমাদের ২৫টি টিমে প্রায় দেড় শতাধিক পুলিশ কাজ করছেন। আমরা ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কে আছি।'
এদিকে মানিকগঞ্জের গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকা আরিচা হাইওয়ের মানিকগঞ্জের অংশে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ নেই।'
সড়ক প্রশস্ত করা এবং ঈদে ঘরমুখো মানুষ আগেই বাড়ি ফেরার কারণে এবার মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়নি বলে জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ
সপ্তাহের শেষ দিন গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা অনেক অংশেই কমে এসেছে।
আজ রোববার সকাল থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন থাকলেও নেই যানজট। এমনকি যাত্রীর জন্য খালি বাস নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে। টিকেট কাউন্টারে যাত্রী না থাকায় অনেকটাই হতাশ টিকেট বিক্রেতারা। এছাড়া ঈদকে ঘিরে জরুরী পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া অন্যান্য ট্রাক চলাচল বন্ধ ঘোষণায় এখন অনেক অংশে মহসড়ক ফাঁকা দেখা যায়।
বিকেলে সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা মোড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকামুখী কিছু যানবাহন থাকলেও চট্টগ্রামগামী যানবাহন অনেক অংশেই কম। রাস্তায় প্রাইভেটকারের সংখ্যা কিছুটা বেশি। তবে এখনও আন্তঃজেলা বাসগুলো স্বাভাবিক ভাবেই চলাচল করছে।
এস আলম পরিবহনের টিকেট বিক্রেতা শাহ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এবার ২৫ রোজা থেকেই মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করে। ফলে এখনও যাত্রীদের চাপ কমে গেছে। তাছাড়া মহাসড়কে কোথাও কোনো যানজট নেই গাড়িগুলো দ্রুত গিয়ে আবার দ্রুত ফিরে আসতে পারছে। ফলে যাত্রীরা আরমে বাড়িতে ফিরতে পেরেছে।'
তিনি বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যাত্রীরা বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু আজকে আমরা বাস দাঁড় করিয়ে রেখে যাত্রী উঠানোর জন্য ডাকছি। সব সিট ফিলাপ হলেই বাস ছাড়ছি। আর বাস ফিলাপ হতে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগছে।'
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) মো. ওমর ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্বাভাবিক ভাবেই যানবাহন চলাচল করছে। কোথাও কোনো যানজট নেই। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি যানবাহন চলাচল করছে। গত শুক্রবার ৫২ হাজার গাড়ি এ সড়কে চলাচল করেছে। কিন্তু গতকাল ৪৯ হাজার। আজকে সেই সংখ্যাটা আরো কম হবে। যানজট না থাকায় এটা বুঝা যাচ্ছে না।'
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশেও যানজট নেই। কিছুটা গাড়ির চাপ থাকলে যানজট না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ঘরে ফেরা মানুষ।
টাঙ্গাইল
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে গাড়ির কিছুটা চাপ থাকলেও যানজট নেই। মহাসড়কের এলেঙ্গা, রাবনা বাইপাস, করটিয়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চলছে।
বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও বড় ধরনের কোনো যানজট তৈরি হয়নি। তবে রাতের দিকে গাড়ির চাপ বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন যাত্রী ও চালকরা।
Comments