সাভারে ৮০ পোশাক শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের নোটিস, বিক্ষোভ

সাভারের আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানার ৮০ জন শ্রমিককে ঈদের আগে চাকরি থেকে ছাঁটাই করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ইউনিকর্ন সোয়েটার লিমিটেডের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন।
ছবি: সংগৃহীত

সাভারের আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানার ৮০ জন শ্রমিককে ঈদের আগে চাকরি থেকে ছাঁটাই করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ইউনিকর্ন সোয়েটার লিমিটেডের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন।

শ্রমিকেরা জানান, আশুলিয়ার গোরাট এলাকায় অবস্থিত স্টারলিংক গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানটির তৈরি পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষ ৮০ জন শ্রমিকের ছবিসহ নোটিস টানিয়ে চাকরিচ্যুত করা হয়।

৩ তারিখের মধ্যে বেতন, বোনাস পরিশোধ নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল বলে জানান তারা। এ ঘটনায় শ্রমিকদের মারধর করা গয় বলেও অভিযোগ আছে।  

'আজ সকালে শ্রমিকরা কারখানায় কাজে যোগ দিতে গিয়ে আমরা দেখতে পাই কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানার গেটে ৮০ জন শ্রমিকের ছবিসহ চাকরিচ্যুতর নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছেন। সেখানে আমার নামও আছে,' বলেন কারখানা শ্রমিক নাহিদ।

নোটিশ দেখতে পেয়ে কারখানার প্রায় ১৫০০ শ্রমিক কারখানায় প্রবেশ না করে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল ও ডিজিএম এর পদত্যাগ দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। চাকরিচ্যুতির নোটিশ ছিড়ে ফেলে। এসময় কারখানার দু'জন কর্মকর্তা আজও দুজন শ্রমিককে মারধার করেন বলে অভিযোগ করেন নাহিদ।

কারখানার শ্রমিক প্রতিনিধি ও চাকরিচ্যুত শ্রমিক মো. আকরাম হোসেন বলেন, 'ডিজিএমকে মারধরের অভিযোগ এনে আমাদের অন্যায়ভাবে ঈদের আগে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা কাজে ফিরতে চাই।'

জানতে চাইলে শিল্প পুলিশ-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল মামুন বলেন, কারখানার শ্রমিকরা একজন কর্মকর্তাকে মারধর করেছিল, বিধায় কারখানা কর্তৃপক্ষ পাওনাদি পরিশোধ করা হবে উল্লেখ করে ৮০ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে। মূলত কারখানাটির ডিজিএমকে নিয়ে কারখানাটিকে ঝামেলা হয়েছে। শ্রমিকরা চাচ্ছে ডিজিএম এর অপসারণ, কিন্তু মালিক চাচ্ছে ডিজিএম কারখানায় থাকুক। সকালে বিক্ষোভের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের বুঝিয়ে কারখানার সামনে থেকে বেলা ১২টার দিকে সরিয়ে দেই। বিষয়টি নিয়ে মালিক ও শ্রমিকদের সাথে আলোচনা চলছে, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।

এ বিষয়ে জানতে কারখানাটির ব্যবস্থাপক (এইচআর এডমিন) মো. জসিম উদ্দিনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে  এই প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে জরুরি মিটিংয়ে আছি জানিয়ে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

পরবর্তীতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।

বেলা তিনটার দিকে গোড়াট এলাকার কারখানাটিতে গিয়ে শ্রমিকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে সরাসরি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে চাইলে সেখানকার সিকিউরিটি গার্ড কতৃপক্ষের বরাত দিয়ে এই প্রতিবেদককে জানান, কর্তৃপক্ষ কথা বলবেন না।

শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতের প্রতিবাদ জানিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ঈদের আগে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা পুরোপুরি অন্যায়। শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল উচিত।

Comments