শিকারী যখন নিজেই শিকার

খাদ্য শৃঙ্খলে হরিণের মৃত্যুতে উদরপূর্তি হয় সিংহের। আবার সিংহের জীবননাশে সৃষ্ট ঘাসে জীবন বাঁচে হরিণের। প্রকৃতির এই নিয়মই যখন ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘুরে যায় তখন শিকারের কবলে প্রাণ হারায় শিকারী।
প্রাণিরাজ্যে জলচর বা স্থলচরের পাশাপাশি উভচর কিছু প্রাণিও যে শিকারী হিসেবে কম নয় তার প্রমাণ মিলেছে। ব্যাঙের মতো ছোট আকৃতির কিছু উভচর প্রাণি তাদের মুখের মাপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ শিকারী প্রাণীদের এক সেকেন্ডের পনেরো শত ভাগেরও কম সময়ে নিঃশ্বেষ করতে পারে।
অন্যদিকে বিটল গ্রাবস হলো ব্যাঙ ও টোডের প্রিয় খাবার। তবে ইপোমিস গ্রাউন্ড বিটলরা এবার ব্যাঙ এবং টোডকে পরিণত করেছে তাদের শিকারে। এরা প্রথমে ব্যাঙ এবং টোডের ওপর আকস্মিকভাবে আক্রমণ করে, আবার কিছু বুঝে উঠার আগে দূরে সরে যায়। তারপর শেষ মুহূর্তে তাদের কাঁটাযুক্ত চোয়ালের সাহায্যে শিকারের দেহকে শুষে ফেলে। এভাবে তারা নিজেদের থেকে বড় আকৃতির উভচর প্রাণিদের খাদ্যে পরিণত করে।

১৯৮৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাত্র আড়াই মাইল দূরত্বে বিভক্ত দুটি দ্বীপে দেখা মেলে আরেক দৃশ্যের। একটি দ্বীপে ছিল গলদা চিংড়ির আধিক্য এবং তাদের মধ্যে ছিল বেঁচে থাকার তীব্র লড়াই। আরেক দ্বীপে ছিল গলদা চিংড়ির খাদ্যের উৎস সামুদ্রিক শামুকের অফুরন্ত আনাগোনা। স্বল্প দূরত্ব হলেও সেদিকে ভিড়ত না গলদা চিংড়িগুলো। গবেষকদের সন্দেহ হয়। তারপর কারণ জানতে বেশকিছু গলদা চিংড়ি ছেড়ে দেওয়া হয় শামুকদের অঞ্চলে।
সেখানে দেখা যায় ভয়ঙ্কর এক দৃশ্য। শামুকগুলো চিংড়ির সংস্পর্শে আসা মাত্রই সেগুলোর ওপরে উঠে চোখ এবং জয়েন্টের চারপাশের নরম টিস্যুর মধ্যে প্রবেশ করে এবং শরীরের ভিতরে ঢুকে খাওয়া শুরু করে। ৩০ মিনিট পর দেখা যায় সেখানে পড়ে আছে কেবল হাজারো মাংসহীন খোসা। ঠিক যেন হরর মুভির বাস্তব চিত্রায়ণ।
রিপলি'স বিলিভ ইট অর নট থেকে অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া।
Comments