মহাবিশ্বের চমকপ্রদ ছবি প্রকাশ

একটি গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের এ যাবত পাওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত এই ছবিটি গতকাল প্রকাশ করা হয়। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন মহাশূন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মাধ্যমে ধারণকৃত প্রথম রঙিন ছবিটি প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একটি গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের এ যাবত পাওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত এই ছবিটি গতকাল প্রকাশ করা হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে অবস্থিত গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টার থেকে আরও কিছু উচ্চ রেজোল্যুশনের রঙিন ছবি আজ মঙ্গলবার প্রকাশের কথা রয়েছে।

৯০০ কোটি ডলারের ওয়েব টেলিস্কোপ হচ্ছে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বৃহত্তম টেলিস্কোপ, যেটি মহাশূন্য বিষয়ক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহার হয়।

বাইডেন ও নাসার প্রধান বিল নেলসন যে ছবিটি দেখিয়েছেন, তাতে ৪৬০ কোটি বছর পুরনো একটি গ্যালাক্সি ক্লাস্টার দেখানো হয়েছে যার নাম স্ম্যাকস ০৭২৩। এর সম্মিলিত ভর একটি 'মহাকর্ষিক লেন্স' হিসেবে ব্যবহার হয়, যার ফলে এই ক্লাস্টারের পেছনে থাকা আরও দূরের গ্যালাক্সি থেকে আসা আলো বহুগুণে বেড়ে যায়।

একটি গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের এ যাবত পাওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত ছবিটি প্রকাশ করেন জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
একটি গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের এ যাবত পাওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত ছবিটি প্রকাশ করেন জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

ধারণা করা হচ্ছে, এই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকা অনেক দূর থেকে আসা আলোর মধ্যে একটি রশ্মি কমপক্ষে ১ হাজার ৩০০ কোটি বছর আগের।

নেলসন জানান, এই রশ্মির বয়স 'বিগ ব্যাং' এর মাত্র ৮০ কোটি বছর পরে।

উল্লেখ্য, বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ১ হাজার ৩৮০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং এর ফলেই সৃষ্টি হয়েছে সৌরজগৎ সহ আমাদের জ্ঞাত বিশ্বের বেশিরভাগ অংশ।

ছবিটি অবমুক্ত করার আগে বাইডেন জানান, 'এটি আমাদের মহাজাগতিক ইতিহাসে একটি নতুন জানালা খুলে দিয়েছে।'

'আজ আমরা সে জানালা দিয়ে আসা প্রথম, জ্বলজ্বলে রোদের দেখা পেয়েছি। এই আলো এসেছে ভিন্ন কোনো জগত থেকে এবং এটি এমন সব তারা থেকে এসেছে, যা আমাদের দৃশ্যমান তারাগুলো থেকে যোজন যোজন দূরত্বে অবস্থিত। এটি আমার জন্য অভাবনীয় একটি ঘটনা।'

নরথ্রপ গ্রুম্ম্যান কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে ওয়েব টেলিস্কোপ নির্মাণ করা হয়। ২০২১ সালের বড়দিনে একে দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে এই টেলিস্কোপটিকে মহাশূন্যে পাঠানো হয়।

মহাশুন্যে পাঠানোর আগে ফ্রেঞ্চ গায়ানার গবেষণাগারা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
মহাশুন্যে পাঠানোর আগে ফ্রেঞ্চ গায়ানার গবেষণাগারা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

মহাশূন্যে স্থাপিত এই টেলিস্কোপে ধারণ করা প্রথম ছবি অবমুক্ত করার আগে গত ৬ মাস ধরে বিভিন্ন ধরনের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে কাজ করা হয়, যার মধ্যে ছিল যন্ত্রাংশ চালু করা, আয়নাগুলোকে সঠিক ক্রমে বসানো এবং এর সব উপাদানের সমন্বয়।

ওয়েব টেলিস্কোপ এখন তার অভিযানের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। বিজ্ঞানীরা কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযানের মাধ্যমে মহাবিশ্বের বিবর্তন, তারাদের জীবনচক্র ও দূর দূরান্তের গ্রহ ও উপগ্রহের আবহাওয়া সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবেন।

৩০ বছর আগে নির্মিত হাবল টেলিস্কোপের চেয়ে ওয়েব টেলিস্কোপ ১০০ গুণ বেশি সংবেদনশীল এবং এটি মূলত অতিলাল স্পেকট্রামে কাজ করে।

আগামী দিনগুলোতে বিজ্ঞানীরা ওয়েব টেলিস্কোপের মাধ্যমে ধারণ করা আরও চমকপ্রদ ছবি ও তথ্য প্রকাশ করবেন, এটাই এখন সবার প্রত্যাশা।

Comments

The Daily Star  | English

Expatriates' remittance helps Bangladesh make turnaround: Yunus

It is the expatriates who help sustain the country, says the chief adviser

5h ago