নায়ক থেকে নায়করাজ

রূপালী পর্দা রাঙিয়ে কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক। স্পর্শ করতে পেরেছিলেন মানুষের আবেগের জায়গাটা। স্থান করে নিয়েছিলেন হৃদয়ের মণিকোঠায়, জনপ্রিয়তার চূড়ায়। শারীরিক প্রস্থান ঘটলেও বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে নায়করাজ রাজ্জাক বেঁচে থাকবেন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে মহানায়ক একজনই, তিনি নায়করাজ রাজ্জাক। শুরুটা ১৯৬৪ সালে, সদ্য কলকাতা থেকে চলে আসেন ঢাকায়, শুরু হয় তার চলচ্চিত্রে নিজের প্রতিভা মেলে ধরার সংগ্রামী জীবন। ১৩ নং ফেগুস্তাগার লেন ছবির ছোট্ট একটি চরিত্র দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় জীবনের শুরু। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন ও নাটকে কাজ করেন তিনি। সে বছরই প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের বেহুলা ছবিতে পূর্ণাঙ্গ নায়ক চরিত্রে তাঁর আবির্ভাব। সেসময় তাঁর উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘ময়নামতি’ ও ‘জীবন থেকে নেয়া’।

দেশ স্বাধীনের পরে নায়ক রাজ্জাক প্রতিষ্ঠা করেন তাঁর নিজের চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন’। ঢাকার চলচ্চিত্রে তিনি জন্ম দেন নতুন ধারার। বলা যায়, ঢাকার চলচ্চিত্রে অ্যাকশনের ধারা রাজ্জাকই আনেন ‘রংবাজ’ সিনেমার মাধ্যমে। সেসময় তাঁর অভিনয় ও দর্শক জনপ্রিয়তা এনে দেয় নায়ক থেকে নায়করাজের মুকুট।

৭৬ –এ ‘কি যে করি’ ছবিতে ‘বাদশাহ’ ভূমিকায় বুদ্ধিদীপ্ত অভিনয় প্রতিভার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি প্রথম অর্জন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৭৭ সালে প্রথম পরিচালনা করেন রোমান্টিক সিনেমা ‘অনন্ত প্রেম’। নায়করাজ রাজ্জাক মোট পাঁচবার ভূষিত হন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে।

বাংলা সিনেমার জগতে নায়করাজ তাঁর বহুমাত্রিক অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ করে রাখতে সক্ষম হয়েছেন চলচ্চিত্রপ্রেমীদের। আশির দশক থেকে তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ছুটির ঘণ্টা, বদনাম, আনারকলি, লাইলি-মজনু, অভিযান, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত ও বাবা কেন চাকর।

তিনি তাঁর ৫০ বছরের অভিনয় জীবনে প্রায় ৩০০টি বাংলা ও কিছু উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র।

কলকাতার দর্শকদেরও তিনি হৃদয়ে কেড়েছেন নিজের অভিনয়ের কারুকার্যে। অভিনয় করেছেন সেখানকার বেশকিছু ছবিতে।

নায়করাজ রাজ্জাককে ২০১১ সালে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।

রূপালী পর্দা রাঙিয়ে কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক। স্পর্শ করতে পেরেছিলেন মানুষের আবেগের জায়গাটা। স্থান করে নিয়েছিলেন হৃদয়ের মণিকোঠায়, জনপ্রিয়তার চূড়ায়। শারীরিক প্রস্থান ঘটলেও বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে নায়করাজ রাজ্জাক বেঁচে থাকবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago