প্রবাসে

জরুরি অবস্থাতেই টোকিও অলিম্পিকের আয়োজন

জাপানের প্রধান মন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা। ছবি: রয়টার্স

জাপানে জরুরি অবস্থা চলাকালে টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধান মন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা তার কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে টোকিও মেট্রোপলিটন এলাকা এবং ওকিনাওয়া প্রদেশে আগামী ২২ আগস্ট পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেন।

আসন্ন টোকিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দুই সপ্তাহ আগে এমন ঘোষণা দিলেন তিনি।

রাজধানীর প্রতিবেশী তিনটি প্রদেশে চলমান বিশেষ সতর্কতাও একই সময়ের জন্য বাড়ানো হয়েছে। এই তিনটি প্রদেশ হচ্ছে- সাইতামা, চিবা এবং কানাগাওয়া। তবে এছাড়াও এবার ওসাকাকে যোগ করা হয়েছে। এসব এলাকায় আগামী ১১ জুলাই পর্যন্ত বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। এছাড়া, অন্য পাঁচটি প্রদেশ হোক্কাইডো, আইচি, কিওতো, হিয়োগো এবং ফুকুওকাতে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ১১ জুলাই বিশেষ সতর্কতার মেয়াদ শেষ হবে।

সংবাদ সম্মেলনের প্রধানমন্ত্রী গত ৩ জুলাই ভারি বৃষ্টিপাতের শিজুওকাতে ভূমিধসে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় এখনো ২০ জন নিখোঁজ আছেন। তাদের উদ্ধার এবং পুনর্গঠনে স্থানীয় প্রশাসন, জাপান পুলিশ, এসডিএফ এবং ফায়ার বিগ্রেডের দুই হাজার সদস্য কাজ করছেন বলে সুগা জানিয়েছেন।

সুগা বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রবীণদের দুই ডোজ টিকা দেওয়ার কাজ ৭০.৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। ৮০ শতাংশ প্রথম ডোজ নিয়েছেন। সাধারণ মানুষের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সবাইকে দুই ডোজ করে টিকা দেওয়া হবে। এ পর্যন্ত মোট ৫ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। জুলাই , আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর এই তিন মাসের প্রতি মাসে ২ কোটি ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফাইজারের নয় কোটি এবং মডার্নার এক কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা মজুত আছে। আমি দেশের সবাইকে টিকে নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

সুগা বলেন, আমি জানি মহামারির এই সময়ে অলিম্পিকের মতো আসর আয়োজন নিয়ে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। আমরা দেখিয়ে দেক এটা জাপান। জাপান অনেক কিছুই পারে এই ম্যাসেজ আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে চাই। তারা যেন দুর্যোগ মোকাবেলায় দীপ্ত শপথ নিতে পারে। জি-৭ সামিটেও আমি একই কথা বলেছি।

তিনি বলেন, ১৯৬৪ সালে প্রথমবারের মতো অলিম্পিক আয়োজনেও টোকিও অনেক বাধা পেরিয়ে বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়েছিল। এবারও আমরা সবাইকে দেখিয়ে দেব যে- জাপান পারে।

‘অলিম্পিকে অংশ নেওয়া প্রতিযোগী, কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক মিডিয়া কর্মীদের জাপানের সাধারণ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই, অলিম্পিক সংক্রান্ত সংক্রমণ নিয়ে সাধারণ জনগণের করোনার ভীতি নেই বললেই চলে,’ বলেন সুগা।  

প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা জনগণের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘জনগণের সহযোগিতায় করোনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না এলেও আসন্ন গ্রীষ্মকালীন টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক ২০২০ সফল আয়োজনের জন্য জনগণের সহযোগিতা কামনা করছি।’

জরুরি অবস্থা কিংবা আংশিক জরুরি অবস্থায় থাকা জেলাগুলোতে আগস্ট মাসের শেষ সময় পর্যন্ত বড় কোনো অনুষ্ঠানে গ্যালারিতে দর্শক সংখ্যা পাঁচ হাজারে বজায় রাখার অনুরোধ জানান তিনি। এমনকি নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার পরও দর্শক সংখ্যা ১০ হাজারে সীমিত রাখার আহবান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

একইসঙ্গে পানশালা, রেস্তোরাঁ এবং কারাওকেগুলো সন্ধ্যা ৮টার মধ্যে বন্ধ এবং ৭টার মধ্যে অ্যালকোহল অর্ডার শেষ করার অনুরোধ জানানো হয়। এই ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনতে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন সুগা।

গত ২৭ জুন জাপানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিশিমুরা ইয়াসুতোশি টোকিওতে পুনরায় জরুরি অবস্থা ঘোষণার পূর্বাভাষ দিয়ে বলেছিলেন, যদি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকে তাহলে সরকার টোকিওতে নতুন করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারে।

জাপানে এ পর্যন্ত মোট ৮ লাখ ১২ হাজার ৫৫৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে টোকিওতে শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার। 

Comments

The Daily Star  | English
10-bed ICU

Life-saving care hampered in 25 govt hospitals

Intensive Care Units at 25 public hospitals across the country have remained non-functional or partially operational over the last few months largely due to a manpower crisis, depriving many critically ill patients of life-saving care.

10h ago