কোরবানির হাটে বিক্রি বাড়েনি এখনও

ক্রেতা কম, সেই ফাঁকে বিশ্রাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। আফতাবনগর হাট। ১৭ জুলাই ২০২১। ছবি: এসকে এনামুল হক।

ঈদুল আযহার বাকি আছে আর মাত্র দুদিন। তবে, এখনও ঢাকার হাটগুলোতে কোরবানির পশু বিক্রি জমে ওঠেনি। হাটে প্রচুর গবাদি পশু থাকলেও, গত বছরের তুলনায় এবার দাম বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

ধুপখোলা, সাদেক হোসেন খোকা খেলার মাঠ, কচুক্ষেত, গাবতলী ও ইস্টার্ন হাউজিংয়ের হাটগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, এবার ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি।

গতকাল রোববার গুলশান থেকে ধুপখোলা হাটে পশু কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এক লাখ ৬৬ হাজার টাকায় দুটি ষাঁড় কিনেছি। একই সাইজের গরুর জন্য গত বছরের চেয়ে ২০ হাজার টাকা বেশি দিতে হয়েছে।’

তিনি জানান, গত বছরের মতো কোরবানির পশুর সংকটে পড়ার আশঙ্কায় এবার আগেই গরু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এবার দুই থেকে তিন মণ ওজনের ষাঁড়ের দাম গতবারের চেয়ে ১০ হাজার টাকা বেশি। চার থেকে ছয় মণ ওজনের ষাঁড়ের দাম বেশি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। কারণ হিসেবে পশুর খাবারের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি মাংসের দাম বাড়ার কথা বলছেন তারা।

ফরিদপুর থেকে ধোলাইখালের গরুর হাটে ছয়টি ষাঁড় নিয়ে আসা নিজাম বলেন, ‘দুমাস আগে স্থানীয় বাজার থেকে আমি এক লাখ টাকায় চার মণ ওজনের একটি ষাঁড় কিনেছি।  এখন এটি এক লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে চাচ্ছি।’

কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মিলন জানান, তিনি এক শিল্পপতির কাছে ১২ ও ১৪ মণের দুটি ষাঁড় পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম থাকায় চারটি ষাঁড়ের মধ্যে দুটি তেমন লাভ ছাড়াই তড়িঘড়ি করে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

তবে বাকি দুটি গরু নিয়ে আশাবাদী মিলন বলেন, ‘ষাঁড় দুটি শেষ দিন বিক্রি করে কিছু বাড়তি টাকা পাই কিনা সেই চেষ্টা করব।’

ধুপখোলা বাজারে ছয়টি ষাঁড় নিয়ে আসা চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ী মো. শওকত জানান, বাজারে পর্যাপ্ত গরু থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা খুব কম।

‘আশা করি, সোমবার (আজ) থেকে ক্রেতা বাড়বে’, বলেন তিনি।

বাজারে ষাঁড়ের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ছাগলের দাম গত বছরের মতোই আছে বলে জানান গাবতলীর ছাগল বিক্রেতা রমজান আলী।

প্রতি বছর গাবতলী হাটে এক ডজনেরও বেশি উট দেখা গেলেও, এ বছর সরকার বিদেশ থেকে উট আনতে দেয়নি বলে চিত্রটি একেবারেই আলাদা। ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন হাটের একমাত্র উটটি নিয়ে এসেছেন। এর দাম চাওয়া হচ্ছে ২৫ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, ‘এ উটটিকে প্রায় চার বছর ধরে লালনপালন করছি। পাঁচ বছর আগে বিদেশ থেকে পাঁচটি উট কিনেছিলাম। চারটি ইতোমধ্যেই বিক্রি করে ফেলেছি।’

বিক্রির জন্য ১১টি মহিষও হাটে এনেছিলেন আমজাদ।

‘ছাই রঙের ছয়টি মহিষ একেকটি ছয় লাখ টাকা করে বিক্রি করেছি। একই দামে বাকি দুটি বিক্রির চেষ্টা করছি’, তিনি বলেন।

সাদা রঙের মহিষগুলো ছাই রঙের মহিষের চেয়ে আকারে ছোট হওয়ায় এগুলো তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা করে বিক্রি করছেন আমজাদ। এ ছাড়া, একেকটি ছোট আকারের ষাঁড় বিক্রি করছেন ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা করে।

এ ছাড়া, গাবতলী হাটে এক বিক্রেতাকে দুটি দুম্বা নিয়ে আসতে দেখা গেছে। প্রতিটি দুম্বার দাম চাওয়া হচ্ছে দুই লাখ টাকা। গতকাল রাত পর্যন্ত দুম্বা দুটি বিক্রি হয়নি।

 

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

Comments

The Daily Star  | English

PR system a threat to democracy: Rizvi

Under the PR system, the party, not the people, will choose MPs, he says

23m ago