যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা: সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের ফান্ডিংয়ের প্রয়োজনীয় তথ্য

ছবি: নাদিয়া রহমান

একটা সময় সোশ্যাল সায়েন্স বা সামাজিক বিজ্ঞানের কোনো বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে বেঁছে নেওয়া হতো ইউরোপকে। তার একমাত্র কারণ না হলেও অন্যতম কারণ ছিল ভর্তির ক্ষেত্রে জিআরই স্কোরকে গুরুত্ব দেওয়া।

তবে কোভিড-১৯-এর পর ইউরোপে উচ্চশিক্ষায় বিভিন্ন বৃত্তি বা স্টাইপেন্ড সীমিত হয়ে যাওয়া এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে জিআরই শিথিল করে দেওয়ার কারণে এখন সামাজিক বিজ্ঞানের অনেক শিক্ষার্থীই পড়তে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে। 

এখানকার উচ্চশিক্ষার অন্যতম সুযোগ হলো ফান্ডিং পলিসি। এর জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ থেকে শুরু করে পুরো টিউশন ফি বহনের পাশাপাশি খণ্ডকালীন টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (টিএ), রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট (আরএ), কিংবা গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিসট্যান্ট (জিএ) হিসেবে একাডেমিয়ায় যুক্ত থাকার সুযোগ দেওয়া হয়। 

এই খণ্ডকালীন চাকরি থেকে যে ফান্ড বা স্টাইপেন্ড দেওয়া হয় তা দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে থাকা-খাওয়ার খরচ চলে যায় এবং এই অর্থের পরিমাণ অবশ্যই নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে কী পরিমাণে ফান্ড দিচ্ছে তার ওপর। এর অন্যতম আরেকটি সুবিধা হলো, আপনার সিভিতে অভিজ্ঞতা যোগ হওয়া। সঙ্গে আপনাকে নতুন এই পরিবেশে, ক্যাম্পাসের বাইরের কোনো পরিবেশে কাজ করতে হচ্ছে না। 

এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন, সামাজিক বিজ্ঞানের যে বিভাগগুলোতে ফান্ডিং দেওয়া হয়, সেটা কীভাবে নির্ধারিত হয়। যেমন, বিজ্ঞান অনুষদে অধিকাংশ ফান্ডিং নির্ধারিত হয় অধ্যাপকের গবেষণা প্রকল্প থেকে। যার জন্য বিজ্ঞান বা সায়েন্সের একজন শিক্ষার্থীকে যোগাযোগ করতে হয় সরাসরি ওই বিভাগের কোনো অধ্যাপককে। 

তবে সামাজিক বিজ্ঞানের জন্য এমনটি সব ক্ষেত্রে প্রয়োজন নেই। কেন না বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এখানে ফান্ড নির্ধারিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের একেক স্টেট, একেক বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানকার শিক্ষার্থী সংখ্যা, সরকারের যে বাজেট বরাদ্দ থাকে গবেষণার জন্য; সবকিছুর ওপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দেয় একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার ফান্ডের পরিমাণ কেমন হবে। 

তাই সামাজিক বিজ্ঞান এবং কলার অধীনে যে বিভাগগুলো রয়েছে, সেটা মাস্টার্স কিংবা পিএইচডি, উভয় ক্ষেত্রে অধ্যাপকের সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগ করতেই হবে, বিষয়টি এমন নয়। স্বল্প সময়ে যে বিষয়টি করা প্রয়োজন তা হলো, বিভাগের ডিজিএস বা কোর্ডিনেটরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা। ওয়েবসাইটে অনেক তথ্য দেওয়া থাকলেও অনেক সময় ফান্ডিংসহ অনেক তথ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে না। এসব বিষয় সরাসরি কোর্ডিনেটরের সঙ্গেই আলোচনা করে নেওয়া ভালো। এমনিতেই এক দেশে বসে অন্য দেশের পলিসি বোঝা দুরূহ, তাই এ ক্ষেত্রে যোগাযোগের বিকল্প নেই। 

পাশাপাশি, স্টেটমেন্ট অব পারপাসে এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন, কোন শিক্ষকের কাজ আপনার গবেষণা আগ্রহের সঙ্গে মিলছে কি না, এতে করে বোঝায় আপনি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টিদের গবেষণা, তাদের কাজ দেখেই বিশ্ববিদ্যালয়টি বাছাই করেছেন। তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় থাকে, যেখানে গবেষণা সহকারী হিসেবে আপনাকে অধ্যাপক বা ফ্যাকাল্টিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে ফান্ডিং হয়তো ওই শিক্ষকের গবেষণা প্রকল্প থেকেই আসে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সোশ্যাল সায়েন্সের ফান্ডিং সেন্ট্রালি হওয়ায় শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হবে, এমনটি নয়! 

 
নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।
   

Comments

The Daily Star  | English

Debunking DMP claim, frame by frame

The Daily Star photographer, who was present at the scene, described the incident as it unfolded

51m ago