তুরস্ক-গ্রিস সীমান্তে বস্ত্রহীন ৯২ অভিবাসী উদ্ধার

তুরস্কের উত্তর সীমান্তের কাছে ৯২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর একটি দলকে বস্ত্রহীন অবস্থায় উদ্ধার করেছে গ্রিস পুলিশ।
তুরস্ক-গ্রিসের মাঝে একটি সীমান্ত প্রাচীর। ছবি: রয়টার্স

তুরস্কের উত্তর সীমান্তের কাছে ৯২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর একটি দলকে বস্ত্রহীন অবস্থায় উদ্ধার করেছে গ্রিস পুলিশ।

পুলিশ বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'শুক্রবার গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে সীমান্ত চিহ্নিত ইভ্রোস নদীর কাছে এসব বস্ত্রহীন পুরুষ অভিবাসীদের খোঁজ পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।'

কীভাবে তারা পোশাক হারিয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়।

গ্রিস নাগরিক সুরক্ষা মন্ত্রণালয় টুইট বার্তায় জানায়, বর্ডার গার্ড ডিপার্টমেন্টের পুলিশ সদস্যরা ফ্রন্টেক্সের সহযোগিতায় ইভ্রোস নদীর তীর থেকে মোট ৯২ জন অবৈধ অভিবাসীকে উদ্ধার করে। তাদেরকে সম্পূর্ণ বস্ত্রহীন অবস্থায় কোনো খাবার ছাড়াই ঘটনাস্থলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

গ্রিস পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ও ইইউ সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের কর্মকর্তাদের তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, অভিবাসীরা তুরস্ক থেকে রাবারের ডিঙ্গিতে নদী পার হয়ে গ্রিস অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল।

টুইট বিবৃতিতে এ ধরনের ব্যবহারের নিন্দা জানিয়ে নাগরিক সুরক্ষা মন্ত্রণালয় বলে, 'তুরস্ক প্রকাশ্যে অভিবাসীদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে।'

গ্রিক অভিবাসন মন্ত্রী নোটিস মিতারাচি এক টুইট বার্তায় বলেছেন, 'অভিবাসীদের সঙ্গে তুরস্কের আচরণ সভ্যতার জন্য লজ্জাজনক।'

তিনি বলেন, এথেন্স আশা করছে আঙ্কারা ঘটনার তদন্ত করবে।

তবে, এই অভিযোগের বিষয়ে তুর্কি কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

গত শুক্রবার গ্রিসের প্যাক্সি দ্বীপের কাছে কর্ফুরতে আরও ৮৭ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়। শিপিং মন্ত্রণালয়ের ইউনিফাইড সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ সেন্টারের সমন্বয়ে গ্রিস জাহাজগুলো এই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে।

এর আগে গত সপ্তাহে গ্রিসের লেসভোস দ্বীপে নৌকাডুবির ঘটনায় ২১ অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যাদের বেশিরভাগই আফ্রিকান নারী ছিলেন। এ ছাড়, ১০ জন নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয় ও ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একই সময়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ কিথিরার কাছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকা প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে পাথুরে এলাকায় ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। গ্রিস কর্তৃপক্ষ ৬ জনের মরদেহ এবং ৮০ জনকে জীবিত উদ্ধার করে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রিস ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ইউরোপীয় অভিবাসন সংকটে প্রথম সারিতে ছিল, যখন সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১ মিলিয়ন শরণার্থী প্রধানত তুরস্ক হয়ে এসেছিল।

লেখক: গ্রিসপ্রবাসী সাংবাদিক

Comments