প্রাথমিক শিক্ষায় সার্কাসও যেভাবে গুরুত্বপূর্ণ

সুইস সার্কাস দলের মধ্যে অন্যতম একটি ‘নি’ (Knie) সার্কাস। দলটি সার্কাস শিল্পে যেমন নিয়ে এসেছে আধুনিকতা, তেমনই আবার ধরে রেখেছে সুইজারল্যান্ডের প্রাচীন সংস্কৃতি ফলক্স (Falx) সঙ্গীত তথা যাত্রাপালা। দলটি ইউরোপের অন্য কোনো দেশে শো নিয়ে যায় না। বরং সুইজারল্যান্ডের মাত্র দুটো শহরেই তাদের শো সীমাবদ্ধ রাখে।
জুরিখের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সার্কাস দলের শিল্পীরা রুটিন করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্কুল কম্পাউন্ডে সার্কাস, থিয়েটার ও যাত্রাপালা আয়োজন করেন। ছবি: নি সার্কাসের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

সুইস সার্কাস দলের মধ্যে অন্যতম একটি 'নি' (Knie) সার্কাস। দলটি সার্কাস শিল্পে যেমন নিয়ে এসেছে আধুনিকতা, তেমনই আবার ধরে রেখেছে সুইজারল্যান্ডের প্রাচীন সংস্কৃতি ফলক্স (Falx) সঙ্গীত তথা যাত্রাপালা। দলটি ইউরোপের অন্য কোনো দেশে শো নিয়ে যায় না। বরং সুইজারল্যান্ডের মাত্র দুটো শহরেই তাদের শো সীমাবদ্ধ রাখে।

আধুনিক সুইস প্রজন্ম সার্কাস ও যাত্রাপালাকে মান্ধাতার আমলের গেয়ো সংস্কৃতি বলে সরিয়ে দেয়নি বা প্রত্যাখ্যান করেনি। উল্টো আরও জোর দিয়ে তারা তাদের পুরোনো এই সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরেছেন। আর এর প্রমাণ এই 'নি' সার্কাসের অভূতপূর্ব আয়। 

২০২২ সাল এই সার্কাস দলের জন্য গত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবসা সফল বছর। গত বছর এই সার্কাস দলটি ৩০০টির মতো শো করেছে জুরিখ ও লুজার্ন শহরে।

জুরিখের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সার্কাস দলের শিল্পীরা রুটিন করে সার্কাস সংস্কৃতির ওপর ক্লাস নিয়ে থাকেন। শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিবছর তারা স্কুল কম্পাউন্ডে সার্কাস, থিয়েটার ও যাত্রাপালা আয়োজন করেন।

'নি' সার্কাস দলে ১৩টি দেশের প্রায় ৪০ জন গুণী শিল্পী আছেন। শিশু শিল্পীদের নিয়ে একটি প্রশিক্ষণালয়ও আছে তাদের। সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে শোগুলোতে প্রাথমিকভাবে চর্চা করার সুযোগ পেয়ে থাকে শিশুশিল্পীরা।

২০২২ সালের বড়দিন এবং ইংরেজি নতুন বছরের শো এর রিজার্ভ টিকেট শো শুরুর দুয়েক সপ্তাহ আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। এমনকি দর্শকের চাপে বন্ধের দিন শনিবারও শো পরিচালনা করতে হয়েছিল দলটিকে।

দেশটিতে এ বছর সার্কাসের নতুন মৌসুম শুরু হবে আগামী মার্চ মাস থেকে। প্রথম শো মানে প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হবে ১০ মার্চ। এই আড়াই মাস দলের শিল্পীরা বিশ্রাম করবেন, ছুটি কাটাবেন।

জুরিখের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সার্কাস দলের শিল্পীরা রুটিন করে সার্কাস সংস্কৃতির ওপর ক্লাস নিয়ে থাকেন। শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিবছর তারা স্কুল কম্পাউন্ডে সার্কাস, থিয়েটার ও যাত্রাপালা আয়োজন করেন। এসব আয়োজনের দর্শক সাধারণত শিশুদের অভিভাবক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ। বড় ক্যাম্পাস এবং স্টেজসহ হলরুম ছাড়া সুইজারল্যান্ডে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় খুঁজে পাওয়া যাবে না।

এমন বিনিয়োগ বাংলাদেশে কেন নেই? দেশে কেন যাত্রাপালা দেখার দর্শক খুঁজে পাওয়া যায় না? দেশে কেন সার্কাস দেখার দর্শক খুঁজে পাওয়া যায় না।

এ প্রসঙ্গে আরও একটি বিষয় জানা উচিত। তা হলো, সুইজারল্যান্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে স্থানীয় পুলিশ স্টেশনের একজন কর্মকর্তাও নিয়মিত ক্লাস নিয়ে থাকেন। শিশুদের রাস্তায় চলাচলের আইনকানুন নিয়ে জানান ওই কর্মকর্তা। রাস্তায় চলাচলের নিয়ম শেখাতে তিনি শিশুদের দলবেঁধে রাস্তায় নিয়ে যান। এই শিক্ষা কার্যক্রমে থাকে সাইকেল প্রশিক্ষণও।

স্থানীয় স্কুল ক্লিনিকের দন্ত চিকিৎসকও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস নেন। রুটিনমাফিক সব শিক্ষার্থীদের দাঁত পরীক্ষা করাতে হয় স্কুল ক্লিনিকে গিয়ে। এটি একটি বাধ্যতামূলক শিক্ষা কার্যক্রম।

স্কুল থেকে নিয়মিত রুটিন করেই ক্লাসভিত্তিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয় সিনেমায়, কনসার্টে কিংবা  সার্কাসের শো-তে। এ ছাড়া, প্রতি দুইমাস পরপর শিক্ষাসফর তো আলাদাভাবে আছেই।

এসব বিষয়ে আলাদা করে জানার সুযোগ আছে। তবে এই নিবন্ধে সার্কাস নিয়েই আলোচনা হোক।

কেন স্কুলে সার্কাসের মতো বিনোদন শিক্ষার দরকার? শিক্ষাবিদরা এমন সব কর্মসূচি দিয়ে শিশুদের কতটা শিক্ষিত করছেন বা কীভাবে গড়ে তুলছেন, সে প্রশ্নটা এখানে আসতেই পারে?

সার্কাস দলগুলো শিশুদের উত্সাহিত করতে বিনামূল্যেই তাদের শো দেখানোর ব্যবস্থা করে থাকে। কোনো শিশু চাইলে ওই দলে গিয়ে আরও ভালো প্রশিক্ষণও নিতে পারে। প্রশিক্ষণের জন্য সার্কাস দলগুলো কোনো অর্থও নেয় না।

সংস্কৃতি, খেলাধুলা চর্চায় বাধ্যতামূলক শিক্ষাগ্রহণের সময় ব্যয় করেও সুইস শিশুরা পড়ালেখায় ভালো করছে। তাদের অনেকে বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানী হচ্ছেন, নোবেল পাচ্ছেন, বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের সঙ্গে আমরা প্রতিযোগিতা করে কেন পারছি না, আমরা কি সেটা বুঝতে সক্ষম হয়েছি?

আজ যে শিশুকে আপনি বিনামূল্যে আদর করে সার্কাস বা যাত্রাপালা দেখাচ্ছেন, কাল যখন তারা বড় হবে, তখন নিজেদের অর্থ দিয়ে টিকেট কিনে শো দেখবে। আর এটাই স্বাভাবিক। এখানে সার্কাস দলের এটাই বিনিয়োগ।

এমন বিনিয়োগ বাংলাদেশে কেন নেই? দেশে কেন যাত্রাপালা দেখার দর্শক খুঁজে পাওয়া যায় না? দেশে কেন সার্কাস দেখার দর্শক খুঁজে পাওয়া যায় না। দেশের এক সময়ের নামী-দামী সার্কাস দলগুলো কেন আজ পুরোপুরি দেউলিয়া?

দেশের এক সময়ের বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল সার্কাস পরিচালনা করতেন তৎকালীন গৌরনদীর ধনী পরিবারের একটি দাস পরিবার। মাত্র ৩০ বছর পর আজ এই দলটির পুরো অস্তিত্বই বিলীন হয়ে গেল দেশ থেকে।

নেশা, পেশা, অর্থ, শ্রম ব্যয় করেও কেন তারা আর টিকে থাকতে পারলেন না? দেশের এত বড় একটি সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এমন প্রশ্ন আসতেই পারে? রয়েল বেঙ্গল সার্কাসের লক্ষণ দাসের দুই ছেলে অরুণ দাস, বরুণ দাস কত না চেষ্টা চালিয়েছিলেন দলটি টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না।

এত জনপ্রিয় এই দলটি বিলীন হওয়ার পেছনের কারণগুলো কি কারও অজানা? প্রথম কারণ হলো, প্রশাসনের নেতিবাচক নিয়ন্ত্রণ। এক সময় যাত্রাপালা বা সার্কাসের শো করতে প্রশাসনের অনুমতির দরকার হতো না। এখন সার্কাস তো দুরের কথা, কোনো অজপাড়াগাঁয়েও যদি কোনো একটি সাংস্কৃতিক দল একটি থিয়েটার করতে চায় নিজেদের পকেটের অর্থ ব্যয় করে, তবুও সেখানে প্রশাসনের অনুমোদন মেলে না। দেখানো হয় নিরাপত্তার হুমকি, আইনশৃঙ্খলার অবনতির পূর্বাভাস।

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা নিজেরা তাদের স্কুলে সার্কাস দেখুক বা সার্কাস শিখুক, এমন শিক্ষা ব্যবস্থা কোনো কর্তাব্যক্তি কি চাইবেন? নিজেদের শৈশবে-কৈশোরে তাদের জন্য এগুলোই কিন্তু বিনোদন ছিল।

বলতে গেলে একদম পরিকল্পিতভাবেই এই বিনোদন শিল্পগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অথচ উন্নত দেশ বিশেষ করে সুইজারল্যান্ডের উদাহরণতো শুরুতেই দেখলাম। উন্নত দেশের একটি সার্কাস দল এই সময়ে এসেও অর্থনৈতিকভাবে গত ১০০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্য পাচ্ছে।

এর অর্থ হলো-সেখানকার আধুনিক প্রজন্ম সার্কাস এবং যাত্রাশিল্পকে তাদের বিনোদনের অংশ হিসেবে সাদরে গ্রহণ করে নিয়েছেন।

এখানে আবার একটা প্রশ্ন এসে যায়। তা হলো, বাংলাদেশের শিশুরা কি জুরিখের শিশুদের চেয়ে গুণে-মানে অধিক শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন?

সংস্কৃতি, খেলাধুলা চর্চায় বাধ্যতামূলক শিক্ষাগ্রহণের সময় ব্যয় করেও সুইস শিশুরা পড়ালেখায় ভালো করছে। তাদের অনেকে বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানী হচ্ছেন, নোবেল পাচ্ছেন, বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের সঙ্গে আমরা প্রতিযোগিতা করে কেন পারছি না, আমরা কি সেটা বুঝতে সক্ষম হয়েছি?

সুইজারল্যান্ডে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত কোনো পাঠ্যপুস্তক নেই। শিশুদের বাড়িতে গিয়ে পড়ার জন্য কোনো বই দেওয়া হয় না বিদ্যালয় থেকে। তবে পাবলিক লাইব্রেরি আছে সেখানে। ইচ্ছে করলেই লাইব্রেরির সব বই শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পড়তে পারে, বাসায়ও নিতে পারে। অভিভাবকরা জানেনই না যে কোন টেক্সট বই তার সন্তানকে স্কুলে পড়ানো হয়।

আর সার্কাস সম্পর্কে যদি আমরা না-ই জানি, তবে কে টিকিয়ে রাখবে এই শিল্পটি? অথচ উঁচু মানের সার্কাস দল গড়তে পারলে, বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড গিয়েও শো করা সম্ভব। আর এর জন্য এই শিক্ষার শুরু করতে হবে প্রাথমিক স্কুল থেকেই।

বাংলাদেশে শিশুদের পারদর্শী করা হয় মুখস্থ বিদ্যায়। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা চাপের মধ্যে রেখে সংস্কৃতি ও খেলাধুলার ধারকাছ দিয়ে না নিয়ে, আসলে শিশুদের কি শেখাচ্ছি আমরা? কতজন শিশুকে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবার জন্য প্রস্তুত করছি, সেটা কি বুঝতে পারছি?

কেন দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নিলো আমাদের সার্কাস ও যাত্রাপালা থেকে, যে শিল্প আজও উন্নত দেশে বিকশিত হচ্ছে সফলতার সঙ্গে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে জমজমাট এই শিল্প আজ উধাও হয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ থেকে।

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা নিজেরা তাদের স্কুলে সার্কাস দেখুক বা সার্কাস শিখুক, এমন শিক্ষা ব্যবস্থা কোনো কর্তাব্যক্তি কি চাইবেন? নিজেদের শৈশবে-কৈশোরে তাদের জন্য এগুলোই কিন্তু বিনোদন ছিল। নিজেরা এই শিল্পের চর্চা করেছেন, এমন প্রবীণ নাগরিক খুঁজলেও আশেপাশে হয়ত পাওয়া যাবে।

তারা গল্প করে, গর্ব করেই বলবেন তাদের শৈশব ছিল একদমই অন্য ধরনের বিনোদনে ভরা। তবে আজ কেন সার্কাস বা যাত্রাশিল্প মুমূর্ষু অবস্থায়?

আমরা যে প্রজন্মকে গড়ে তুলছি তাদের মধ্যে কতজন কিশোর ৩ কিলোমিটার রাস্তা দৌড়াতে পারবেন? কতজন কিশোর বুড়িগঙ্গা নদী সাঁতরে পার হতে পারবে?

আজ যে শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছে, ১৫ বছর পর সে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করবে। এই ১৫ বছরেই বদলে দেওয়া সম্ভব একটি প্রজন্ম তথা সমাজ। 

নদীর দেশ, পানির দেশ অথচ সব শিশুদের সাঁতার শিক্ষাটা আমরা বাধ্যতামূলক করতে পারিনি, করবার চেষ্টাও করিনি। এমন শিক্ষার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করিনি।

জুরিখের স্কুলের শিশু-কিশোররা বেড়ে ওঠে প্রচণ্ড শীতের মধ্যে। তারপরও তারা সবাই সাঁতার জানে এবং চাইলে জুরিখ লেক পার হতে পারবে সাঁতরে। প্রতি বছর এমন একাধিক সাঁতারের অনুষ্ঠান আয়োজন করে প্রশাসন। 

আমাদের দেশের শহরের রাস্তা মাঝে মাঝে পানিতে ডুবে যায়, অথচ দেশের প্রজন্মের অর্ধেকও সাঁতার জানেন না। প্রজন্মের এমন পরিণতির জন্য দায়ী কে?

কর্তারা তো তাদের শৈশবেই সাঁতার শিখেছেন। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মকে কেন শেখালেন না, তার জবাবটা কি তারা দিতে পারবেন? আর সাঁতারসহ খেলাধুলা শিক্ষা দিতেই এত অনীহা, তাহলে সার্কাস শিখতে দেবেন কীভাবে?

কিশোর বয়সে নিজেরা লুকিয়ে সার্কাস দেখে বিনোদন নিয়েছিলেন। তাহলে কি ওই বিনোদন নিয়ে সে সময়ে অপরাধ বা অন্যায় করেছিলেন? নাকি তখনকার অর্জিত গুণে বা লব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়েই নিজ পেশার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন? 

শেষ প্রশ্ন, সুইস প্রাইমারি স্কুলের মতো বাংলাদেশে আপনার শিশু যাত্রা, সার্কাস শিখুক, এটা কি একবারের জন্যও চেয়েছেন? চাইলে কজন চাইছেন?

আপনার সন্তানকে তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কনসার্টে যাক, সিনেমায় যাক, সার্কাসে যাক এবং সর্বোপরি এ ধরনের বিনোদনে রুটিন করে স্কুলের সবাই অংশ নিক, এটা কি আপনি চান?

আজ যে শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছে, ১৫ বছর পর সে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করবে। এই ১৫ বছরেই বদলে দেওয়া সম্ভব একটি প্রজন্ম তথা সমাজ। 

বর্তমান সরকার একটানা ক্ষমতায় আছে বেশ অনেক বছর হলো। সরকারের প্রথম দিকে যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছিল, তারা কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবন প্রায় শেষ করে ফেলেছেন। খবর নিয়ে দেখুন, তাদের অর্ধেকের বেশি কিন্তু সাঁতার জানেন না। সার্কাস জানবার তো প্রশ্নই আসে না। 

আর সার্কাস সম্পর্কে যদি আমরা না-ই জানি, তবে কে টিকিয়ে রাখবে এই শিল্পটি? অথচ উঁচু মানের সার্কাস দল গড়তে পারলে, বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড গিয়েও শো করা সম্ভব। আর এর জন্য এই শিক্ষার শুরু করতে হবে প্রাথমিক স্কুল থেকেই। ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৪০ জনকে আমরা কেন শিল্পী বানাতে পারব না?

সঠিক শিক্ষা তৈরি করে ইতিবাচক রুচিজ্ঞান। আজকের প্রাথমিকে পড়ুয়া শিশুটি ১৫ বছর পরেই আপনাকে উপহার দিবে একটা চ্যালেঞ্জিং বিশ্ব এবং একটি স্মার্ট বাংলাদেশ যা আমরা চাইছি।

লেখক: সুইজারল্যান্ডপ্রবাসী।

Comments