রক্তের জন্য চারিদিকে হাহাকার, ইরান মডেলে সমাধান

যদি কখনো কোনো শহরে রক্ত সংকট দেখা দেয়, তাৎক্ষণিক অন্য শহর থেকে সরকারিভাবে রক্ত নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, এমনকি হেলিকপ্টারযোগে।
প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতিদিন রক্ত চেয়ে পোস্টগুলো দেখলে খারাপই লাগে। কারো সিজার হবে, কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত, কারো পরিবারের সদস্য সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে। সবারই রক্ত লাগবে। চারিদিকে যেন রক্তের জন্য হাহাকার।

এক দিকে রোগী হাসপাতালে ভর্তি, আরেক দিকে তার জন্য রক্ত খুঁজতে রোগীর পরিবারের হয়রানি। আর রক্তের গ্রুপ যদি নেগেটিভ হয়, তবে তো কথাই নেই।

স্বাভাবিকভাবেই কারো স্বজন হাসপাতালে ভর্তি থাকলে সেই পরিবারের সবাইকে একটা চিন্তার মাঝে সময় পার করতে হয়। এর মধ্যে রক্তের সন্ধান করার বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে ওঠে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতেও কী এভাবেই কোনো পরিবারকে রক্তের জন্য চিন্তায় সময় পার করতে হয়?

উদাহরণ হিসেবে ইরানের কথায় যদি বলি, দেশটির প্রতিটি শহরে, এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামেও সরকারিভাবে 'ব্লাড ব্যাংক' আছে। সেখানে সকল গ্রুপের রক্ত সংরক্ষণ করা হয়। 'ব্লাড ব্যাংকে' রক্ত শেষের দিকে চলে এলে স্থানীয় টেলিভিশনসহ সকল মিডিয়ায় ঘোষণা দেওয়া হয়, যেন জনগণ এগিয়ে এসে রক্ত দিয়ে যান। এর ফলে সবসময় চাহিদার মতো রক্ত সেখানে সংরক্ষণ থাকে।

এ ছাড়া, যদি কখনো কোনো শহরে রক্ত সংকট দেখা দেয়, তাৎক্ষণিক অন্য শহর থেকে সরকারিভাবে রক্ত নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, এমনকি হেলিকপ্টারযোগে।

সামগ্রিকভাবে এই ব্যবস্থাপনার কারণে রোগীদের পরিবারকে রক্তের জন্য কোনো চিন্তা করতে হয় না।

বাংলাদেশে কোথাও বড় অগ্নিকাণ্ড বা দুর্ঘটনা ঘটলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে অনেক সময় জানানো হয় যে ঘটনা সংঘটিত এলাকায় রক্তের প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে 'ব্লাড ব্যাংক' তৈরি করে রক্ত সংরক্ষণের বিষয়ে আমাদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আরও বেশি ভাবতে পারেন এবং গণমাধ্যম কর্মীরাও এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।

ডা. কামরুজ্জামান নাবিল; এমবিবিএস, ইস্পাহান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইরান।

[email protected]

Comments