মালয়েশিয়ায় ১৭১ বাংলাদেশি বৈধ কর্মীকে আটকের নিন্দা এমটিইউসির

মালয়েশিয়ার এ শ্রমিক সংগঠন বলছে, যেসব শ্রমিক এজেন্টদের মাধ্যমে চাকরি না পেয়ে প্রতারিত হয়েছেন, তাদের শাস্তির পরিবর্তে সহায়তা করা উচিত। 

মালয়েশিয়ার জোহর প্রদেশে ১৭১ বাংলাদেশি বৈধ অভিবাসী কর্মীকে আটকের নিন্দা জানিয়েছে দেশটির শ্রমিক সংগঠন মালয়েশিয়ান ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস (এমটিইউসি)। 

গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটির মহাসচিব কামারুল বাহারিন মনসুর এ নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, যেসব শ্রমিক এজেন্টদের মাধ্যমে চাকরি না পেয়ে প্রতারিত হয়েছেন, তাদের শাস্তির পরিবর্তে সহায়তা করা উচিত। 

সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, 'এমটিইউসি চাকরি জালিয়াতির শিকার বিদেশি কর্মীদের আটকে পুলিশ ও ইমিগ্রেশনের ভুমিকায় হতবাক। প্রতারণার শিকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়ে সহায়তা করা উচিত।'

এমটিইউসি বলছে, 'এসব বিদেশি শ্রমিক বৈধভাবে প্রবেশ করেছে। কিন্তু প্রতারণার শিকার হয়ে নিয়োগকর্তার কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।'  
এমটিইউসি মালয়েশিয়া সরকারকে এ বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করতে এবং যারা চাকরির প্রতিশ্রুতি পেয়ে মালয়েশিয়া গিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় না, তাদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

কামারুল বাহারিন মনসুর বলেন, 'এমটিইউসি মালয়েশিয়ার বাইরে থেকে এবং সরাসরি বিদেশি কর্মীদের নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থা ও ব্যক্তির মাধ্যমে এ ধরনের প্রতারণা হচ্ছে বলে রিপোর্ট পেয়েছে।'

তিনি আরও উল্লেখ করেন, 'যদি এই সমস্যা সঠিকভাবে সমাধান করা না হয়, তাহলে পরের বছর মানবপাচার প্রতিবেদনে মালয়েশিয়া তৃতীয় স্তরে পড়ার ঝুঁকি আছে।'

এমটিইউসি সরকারকে পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বিদেশি কর্মীদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছে। এ ধরনের শিথিল অবস্থানের ফলে শ্রম আইন লঙ্ঘন হতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'কোম্পানিগুলো বিদেশি শ্রম সরবরাহ শিল্পের সুবিধা নেয়, যা সোনার খনি হিসেবে দেখা হয়। এই শিল্পে দুর্নীতি, ঘুষ, ক্ষমতার অপব্যবহার, গুন্ডাবাদ ও কার্টেলসহ বিভিন্ন নেতিবাচক চর্চা আছে।'  

বিদেশি কর্মীদের সমস্যার উল্লেখ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গ্লাভস ও পাম তেল প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে জানিয়ে মানসুর বলেন, 'বিদেশি কর্মীদের জন্য সুরক্ষা ও কল্যাণমূলক ব্যবস্থাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি, যেন দেশটিকে সুনাম ক্ষুন্ন হওয়া এবং অর্থনৈতিক নেতিপ্রভাব থেকে রক্ষা করা যায়।'

মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনকে বিদেশি কর্মী নিয়োগের সঙ্গে জড়িত পুরো চক্রের ওপর ব্যাপক তদন্ত শুরুর অনুরোধ করেছে এমটিইউসি।

সংগঠনটি বলছে, বিদেশি কর্মীদের পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর ওপর তদন্ত করা উচিত, তাদের প্রবেশের অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের ও বিদেশি কর্মী গ্রহণকারী সংস্থাগুলোর ওপরও তদন্ত করা উচিত।

জোহর পুলিশ বলেছে, গত ২০ ডিসেম্বর ১৭১ জন বাংলাদেশি পুরুষের একটি দল তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করতে বায়ু দামাই থানার দিকে যাচ্ছিল। তাদের দাবি ছিল, তারা মালয়েশিয়া প্রবেশের তিন থেকে ছয় মাস পরেও নিয়োগ পায়নি। 

আটককৃতদের অভিবাসন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Comments