মিশিগানে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত

১৬ বছর আগে পরিবারের সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। 
হোসেন আল রাজি। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে ওয়ারেন সিটি পুলিশের গুলিতে এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় সময় ১২ এপ্রিল শুক্রবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হোসেন আল রাজির বয়স হয়েছিল সাড়ে ১৮ বছর। ১৬ বছর আগে তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে যায়। 

ওয়ারেন সিটির পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুপুরে ওই তরুণের পরিবারের পক্ষ থেকে ৯১১ নম্বরে ফোন যায়। তাৎক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্সসহ ৩ পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে পৌঁছান। 

পুলিশ অফিসাররা ওই তরুণের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখতে পান এবং সেটি ফেলে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি অনুরোধ উপেক্ষা করে পুলিশ অফিসারদের দিকে অস্ত্র নিয়ে এগিয়ে যান।

আত্মরক্ষার্থে পুলিশ অফিসাররা ১০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে ও পরে গুলিবিদ্ধ যুবককে হাসপাতালে পাঠায়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনা নিয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে। নতুন কোনো তথ্য পেলে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

নিহতের বাবা মোহাম্মদ আতিক হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি সকালে ফজরের নামাজ আদায় করেন। তারপর ঘুমাতে যান। দুপুরের দিকে স্ত্রী ও মেঝ ছেলে তাকে জানান যে, হোসেন আল রাজি অসংলগ্ন আচরণ করছে।

তিনি নিজেও ছেলেকে অসংলগ্ন আচরণ করতে দেখে মেঝ ছেলেকে বলেন ৯১১ নম্বরে কল দিতে। 

আতিক হোসেন বলেন, 'কিছুক্ষণের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশ এলে, আমরা নিরাপদ স্থানে আছি কি না, জানতে চায়। আমরা গ্যারেজে গাড়ির ভেতর আছি বলার কিছু সময়ের মধ্যে ২-৩ বার গুলির শব্দ শুনতে পাই।'

'কিছুক্ষণ পর পুলিশ অফিসাররা আমাদের ডেকে সবাইকে স্থানীয় পুলিশ স্টেশন নিয়ে এক এক করে সবার জবানবন্দি নেন। আমরা সবাই বাসায় ফিরে এলে বিকেল ৪টার দিকে খবর আসে আমার ছেলে মারা গেছে,' বলেন তিনি।

তিনি বলেন, 'আমি অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্য চাইলাম ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য। আর পুলিশ আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেলল। বিষয়টা আমার বোধগম্য নয়। কী এমন অপরাধ করল আমার ছেলে, যে কারণে ওকে গুলি করে মারতে হলো।'

নিহত আল রাজির বাবা বলেন, 'আমার ছেলের মরদেহ এখনো হাসপাতালে, দেখতেও পারছি না। সোমবার মরদেহ হস্তান্তরের সম্ভাবনা আছে। যদি হয় তাহলে ওইদিনই ইসলামিক সেন্টার অফ ওয়ারেনে দুপুরে জানাজা নামাজ শেষে এখানেই দাফন সম্পন্ন করা হবে।'

জানা গেছে, নিহত হোসেন আল রাজি মোহাম্মদ আতিক হোসেনের বড় ছেলে ছিলেন এবং পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে ছিলেন দ্বিতীয়। তাদের গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিয়ানিবাজার পৌরসভার সুপাতলায়।

Comments