জাপানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বর্ষবরণ

বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেষ হলো জাপান প্রবাসীদের বর্ষবরণ ১৪৩২। শতকণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার পর 'এসো হে বৈশাখ এসো এসো' পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাপানে বাংলা নতুন বছর '১৪৩২'-কে বরণ করা হয়েছে।
গত ১৩ এপ্রিল টোকিওর অদূরে সাইতামা প্রিফেকচারের মিসাতো সিটির চুও এলাকার নিওদোরি পার্কে '১ম বৈশাখী মেলা জাপান ১৪৩২' অনুষ্ঠিত হয়।
দিনব্যাপী বৃষ্টির মধ্যেও প্রবাসীদের অংশগ্রহণ, আনন্দ-উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না। বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও প্রবাসীদের ঢল নামে। বৃষ্টি-শীত উপেক্ষা করে প্রবাসীদের পাশাপাশি স্থানীয় জাপানি, ভারতীয় বাংলাভাষী এবং অন্যান্য দেশের উৎসুক জনতাও অংশ নেয় বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনে। এছাড়াও মেলাটি উন্মুক্ত পার্কে অনুষ্ঠিত হয় বলে অনেক ভ্রাম্যমাণ দর্শনার্থীরও পদধূলি পড়ে বাংলাদেশিদের এই মেলায়।
দিনভর উৎসবে মুখর ছিল নিওদোরি পার্ক। প্রাকৃতিক বৈরিতা যেন চাপা পড়ে যায় বাঙালির প্রাণের উচ্ছ্বাসে। প্রবাসীদের পদচারণায় সাইতামার নিওদোরি পার্কটি হয়ে ওঠে জাপানের মাটিতে এক টুকরো বাংলাদেশ, প্রবাসী বাঙালিদের মিলনমেলা।

সকালে শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটিতে ড. তপন কুমার পাল পরিচালিত শিশুশিল্পী একাডেমির শিশুশিল্পীদের দলীয় নাচটি ছিল বিশেষ উপভোগ্য। এছাড়াও একই একাডেমির শিশুশিল্পী ভাগ্যশ্রী পালের একক নৃত্য পরিবেশনাটি শুধু প্রবাসীরা-ই নয়, স্থানীয় দর্শকরাও উপভোগ করেছেন।
প্রথমবারের মতো এ আয়োজনে ৫৩টি প্রতিষ্ঠান স্পন্সর হয়ে আয়োজনকে সফল করার পেছনে অবদান রাখেন। আয়োজনে সর্বমোট ২২টি স্টল ছিল। এর মধ্যে ১১টি ছিল খাবারের, যা জাপানে বাংলাদেশি খাদ্য সংস্কৃতিকে উপস্থাপন করে। এছাড়াও বাংলাদেশের পোশাক সংস্কৃতি, আইটি, রেমিট্যান্স, মেহেদীর সাজ, আর্ট গ্যালারি মেলায় প্রাধান্য পায়।

গুণীজন সংবর্ধনা মেলাকে বিশেষ মর্যাদায় উন্নীত করে। এ বছর গুণীজন সংবর্ধনা পান জাপান জাতীয় সংসদের সদস্য ইয়োশিহির সুযুকি, সাইতামা প্রিফেকচারের সদস্য মুনেয়াকি মিতা, রিককিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়োশিয়াকি নোরো, অধ্যাপক তেৎসুও মিযুকামি, মিসাতো সিটি রোটারি ক্লাবের সভাপতি কিয়োকো আরিয়াকে, জাপান প্রবাসী মুনশী কে. আজাদ, শিনজি নাগামোতো ও এশিয়ান পিপলস ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাৎসুও ইয়োশিনারি প্রমুখ।
মেলায় আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন প্লেব্যাক-খ্যাত সংগীতশিল্পী আমেরিকা প্রবাসী রিজিয়া পারভীন এবং ক্লোজআপ-খ্যাত সংগীতশিল্পী নীলিমা শশী।

সবশেষে আয়োজকদের প্রধান বাদল চাকলাদার সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে এবং আগামী বছর আবার দেখা হওয়ার আশা ব্যক্ত করে মিসাতো সিটির চুও এলাকার নিওদোরি পার্কে '১ম বৈশাখী মেলা জাপান ১৪৩২'র সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
Comments