স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট

এক কামরার সাজ

প্রযুক্তিকে ধন্যবাদ। কত কিছুই সহজ করে দিচ্ছে। বিশাল বিল্ডিংয়ের আধেক পেরিয়ে ওপরে উঠছি তাও এক মিনিটের মাথায়। ফ্রিজ থেকে নামানো ঠাণ্ডা খাবার এক নিমিষে গরম হয়ে উঠছে। খুব শিগগির, এক কামরার ঘর বদলে তিন ঘরের সুবিধা দেবে এই প্রযুক্তিই এবং এক আঙুলের স্পর্শে। ঘরকে বদলে দেবে বসার ঘর, অফিস ঘর কিংবা আরামদায়ক শোবার ঘরে। স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট বা এক কামরার বলতে কোনো আড়াল ছাড়া এক কামরার আবাসকেই বোঝায়। যাতে কোনো দেয়াল বা কক্ষ থাকে না। তথাপি নানাভাবে ঘরের মাঝেই অনেক ঘরের সাজ নিয়ে আসা যায়। হালের ইন্টেরিয়র কোম্পানিগুলো এ কাজে প্রযুক্তিকেও কাজে লাগিয়েছে।

 রোবটিক, আর্কিটেকচার ও ডিজাইন- এই তিনটা বিষয়কে কাজে লাগিয়ে তৈরি নতুন প্রযুক্তির নাম ‘ওরি’ সুপরিচিত ‘ওরিগামি’র মৌলিক ধারণা এক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয়েছে। যোগ করা হয়েছে ‘অটোমেশন’ পদ্ধতিটি উদ্ভাবনকারী কোম্পানির দাবি- এই বিশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের সাজকে করে তুলবে কার্যকর, সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। সুখবর, নতুন বছরেই বিশ্ব বাজার মাতাতে আসবে এটি।

ঘর সাজাতে প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়াও সজ্জাবিদরা বিভিন্নভাবে নতুন বছরে নতুন ধারণা দিচ্ছেন। আসবাবে, রংয়ে, সাজে আসছে নতুন নতুন বাহার। মনের রংয়ে প্রিয় এক কামরার অ্যাপার্টমেন্টটিও একইভাবে সাজিয়ে নিন। রং বাছাই করুন নিজের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে।

মূলত, রংয়ের তিনটি প্যালেটই সাজিয়ে বসেছে এবার ইন্টেরিয়র দুনিয়া, যা মিলেমিশে যাবে ঘরের মালিকের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে। আত্মবিশ্বাসী, আত্মনিয়ন্ত্রিত ও আরামপ্রিয়- ব্যক্তিত্বের এই তিন ধাঁচের মাঝ থেকে বাছাই করুন নিজের ধাঁচ। তারপর ছাপ রাখুন নিজের ঘরের দেয়ালে কিংবা রঙিন কোনো আসবাবে। জানা কথা, এক কামরা ফ্ল্যাট দেয়ালের আড়াল তুলে ব্যক্তিগত করে তোলার সুযোগ কম। তাই দেয়াল কিংবা আসবাব বা ছবির ফ্রেমের রং নির্বাচনে সার্বজনীন হওয়া উচিত।

একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে বেছে নিন সৃজনশীল ও  সামাজিক রংগুলো। যেমন- গাঢ় গভীর নীল, ঝকমকে লাল কিংবা হালকা লেবু রংয়ের সবুজ বা আত্মনিয়ন্ত্রিতভাব ফোটাতে বাছুন গাঢ় তামাটে থেকে বাদামি ছাই কিংবা গাঢ় ছাই থেকে শুরু করে পোড়ামাটি বা টেরাকোটার রংকে। এবং সাবলীল স্বাচ্ছন্দ্যময়তা বোঝাতে এক কামরার ঘরের সাজ হোক প্যাস্টেল গোলাপি বা পেস্তাসবুজ কিংবা সূর্যমুখী হলদে। প্রতিটি রংয়ের সঙ্গে মনন ও মানসিকতার সম্পর্ক আছে। ভাবুন কোন রং দেখলে মন কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। সেভাবেই ঘরের রং নির্বাচন করুন। রং যে কোনো আবেগকে ছুঁয়ে দিতে পারে। তাই শান্তি ও সুষমা বজায় রাখতে, স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের রং বাছুন বুদ্ধিমানের মতো। অনেকে আবার একই রংয়ে নিজেকে আটকাতে ভালোবাসেন না, বদলাতে ভালোবাসেন। তারা বেছে নিতে পারেন থ্রিডি সেলফ অ্যাডহেসিভওয়াল স্টিকার বা দেয়ালকাগজ। ঘরের শব্দ শুষে নিয়ে এই স্টিকার দেবে শব্দদূষণ থেকে মুক্তি। ইটের দেয়ালের মতো দেখতে স্টিকার বেছে নিন। প্রাকৃতিক ভাব নিয়ে আসবে নিষ্প্রাণ চুনসুরকির দেয়ালে। সাদা ছাড়াও রকমারি রংয়ের স্টিকার বা ওয়ালপেপার পাওয়া যায়। যারা ভাড়া ফ্ল্যাটের দেয়াল রাঙাতে পারছেন না, কিন্তু টুকটুকে লাল দেয়ালের স্বপ্ন দেখেন, তারা অনায়াসে একটি দেয়াল লাল কিংবা তামাটে করে নিতে পারেন। পানিরোধক কাগজ বেছে নিলে পরিষ্কার রাখা সহজ হবে এবং সহজে নষ্ট হবে না।

এক কামরার অ্যাপার্টমেন্টগুলোয় সব কিছুই চোখের সামনেই থাকে। বসার ঘর থেকে শুরু করে রান্নাঘর পর্যন্ত। আর সাজানোর জন্য একটাই ঘর! অন্যরকম একটা চ্যালেঞ্জ। স্টোররুমটা হিসাবের বাইরে রেখে কিছু আধুনিক ধারণা কাজে লাগিয়ে গৃহসজ্জা সম্পন্ন করতে পারেন। ঘরের আসবাবগুলো গুছিয়ে বসান। দেয়াল নেই বলে ভাববেন না। আলো, র‌্যাগ আর ছোট ছোট ফার্নিচার কাজে লাগিয়ে তৈরি করুন ঘরের আলাদা অংশ। ব্যবহারের সঙ্গে আসবাবের ব্যবহার মিলিয়ে নিন। জানালায় দামি আর ভারী পর্দা না লাগিয়ে আলো আসতে দিন। ছোট ঘরের মাঝে জায়গা করে নেবে অনেক বড় দিন।

আর আসবাব ব্যবহারের ধরনটাও বুঝে নিতে হবে। কোন আসবাব কখন ব্যবহার করবেন। এক্ষেত্রে ডিম আগে না মুরগি আগে ভাবার কোনো অবকাশ নেই। জানালার পাশে ফেলুন টানা লম্বা খাট; তাতে রাখুন রং-বাহারি কুশন। পাশে ড্রেসিং টেবিল, ছোট সেলফ, সাইডল্যাম্প ইত্যাদি। তারপর র‌্যাগ বা ছোট কার্পেট অথবা সোফা। সোফার সামনে ছোটটি টেবিল। এভাবেই এক ঘরেই সাজিয়ে নিন পাঁচমিশালী মনন।

ছবি : সংগ্রহ  

Comments

The Daily Star  | English

Salehuddin urges all to work together to overcome challenges of economy

'We are in the midst of all sorts of challenges,' says the finance adviser

2h ago