কেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম?
চলচ্চিত্রের এতোগুলো সংগঠন থাকতে কেন আবার নতুন করে প্রযোজক নাসিরউদ্দিন দিলুকে সভাপতি ও পরিচালক কাজী হায়াৎকে সাধারণ সম্পাদক করে আত্মপ্রকাশ করলো “বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম”? বিষয়টি জানা যাবে অনুষ্ঠানে আগত বিভিন্ন জনের অভিমতে।
গতকাল (২ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা ক্লাবে জমকালো এক আয়োজনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয় চলচ্চিত্র ফোরামের। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলেন মৌসুমী ও নুসরাত ফারিয়া।
“বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম”-এর অন্যান্য পদগুলোর মধ্যে সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন মোহাম্মেদ হোসেন, নাদের চৌধুরী, ড্যানি সিডাক, নাদের খান ও সেলিম খান। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপু।
ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন এম ডি ইকবাল এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মোহাম্মদ রমিজ উদ্দিন। ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে রয়েছেন ফারহান আমিন নূতন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক আরিফা পারভীন জামান মৌসুমী, দপ্তর সম্পাদক জাহিদ হোসেন এবং কোষাধ্যক্ষ হিসেবে রয়েছেন কামরুজ্জামান কমল।
এছাড়াও, সংগঠনটির সদস্য হিসেবে আছেন আব্দুল আজিজ, শাকিব খান, ওমর সানী, কাজী মারুফ, বিদ্যা সিনহা মিম, ববি, অমিত হাসান, শবনম বুবলি, শিবা শানু, নানা শাহ, ডি জে সোহেল, হাফিজুর রহমান সুরুজ, বড়ুয়া মনোজিত ধীমান এবং অজিত নন্দী।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, “শাকিব জনপ্রিয় নায়ক। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি বেশ ভালো বক্তব্য দিতে পারেন। আগুন ঝরাতে পারেন কথায়। তিনি রাজনীতিতে আসলে ভালো করবেন। তাঁকে রাজনীতিতে আসার আহ্বান রইলো।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী হায়াৎ বলেন, “আমাদের চলচ্চিত্র আজ এক বিশাল সংকটে রয়েছে। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য যারা এ দেশের চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি তাদের সবার এক হয়ে কাজ করার একটি প্লাটফর্ম হিসেবে এ সংগঠনটির জন্ম।”
শাকিব খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “যারা নিয়মিত সিনেমায় কাজ করছেন, তারাই এই ফোরামে রয়েছেন। অকাজের লোকরাই অন্যের সমালোচনায় মেতে থাকেন। আমাদের চলচ্চিত্র ফোরামে অকাজের লোক নেই। এ সংগঠনে সবার স্বার্থ রক্ষিত হবে।”
বাংলাদেশে এখন ভালো ছবি হচ্ছে উল্লেখ করে ঢালিউডের এই শীর্ষ অভিনেতা বলেন, “আয়নাবাজি” এর উদাহরণ। “এছাড়াও, আরও ভালো ছবি নির্মিত হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “চলচ্চিত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করা হয়েছে। যাদের প্রয়োজন তাদের নিয়েই সংগঠন করা হয়েছে। হল মালিক, প্রযোজক, বুকিং এজেন্ট, অভিনয় শিল্পী, নির্মাতা, প্রডাকশনবয় সবাই থাকছেন এই ফোরামে।”
শাকিবের মন্তব্য, “ইদানীং আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে ‘ব্যান’ করা একটি কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি আমি অনেক বছর দেখিনি। কথা বললেই, পা ফেললেই ‘ব্যান’। কিছু বললেই ‘ব্যান’! এতগুলো বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি, এরপরও কি কথা বলার স্বাধীনতা পাব না?”
মৌসুমী বলেন, “শাকিব খান আমাদের বাংলা ছবির সুপারস্টার। দেশ ছাড়িয়ে সে কলকাতাতেও সুনাম অর্জন করেছে। আমাদের দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। কিছুদিন আগে তাকে নিয়ে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এরপর, একদিন শাকিব প্রস্তাব দেয় নতুন একটি সংগঠন করার জন্য। মূলত, তাঁর প্রস্তাবেই চলচ্চিত্র ফোরামের যাত্রা। আমরা সবাই চলচ্চিত্রের উন্নতি চাই। চলচ্চিত্র বাঁচলে শিল্পীরা বাঁচবে, সিনেমা হল বাঁচবে। আমাদের মধ্যে আগামীতে আর কোনো দলাদলি হবে না বলে আমার বিশ্বাস।”
উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র ফোরামের সদস্য সংখ্যা ২০০ এর উপরে। মূল কমিটিতে থাকছেন ২৭ জন। এর মধ্যে ১১ জন কার্যনির্বাহী সদস্যের মধ্যে শাকিব খান রয়েছেন সর্বশেষ কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে।
চলচ্চিত্র ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ হাসান ইমাম, সুবর্ণা মুস্তাফা, মেহের আফরোজ শাওন, ববি এবং বদরুল আনাম সৌদসহ আরও অনেকেই।
Comments