মহামারিতে কমেছে শার্টের চাহিদা

ফরাসি ক্রেতা এমএসআরের কাছে ১৯৭৮ সালে কয়েক হাজার ফরমাল শার্টের চালানের মাধ্যমে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করে।

ফরাসি ক্রেতা এমএসআরের কাছে ১৯৭৮ সালে কয়েক হাজার ফরমাল শার্টের চালানের মাধ্যমে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করে।

বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানির তালিকায় শার্টের আধিপত্য বজায় ছিল বহু বছর ধরে।

তবে, সম্প্রতি নিট পণ্যের রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় পেছনে পড়ে গেছে শার্ট। নিট পণ্যের কাঁচামালের সহজলভ্যতাও এর কারণ।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দেশের স্পিনাররা বর্তমানে নিটওয়্যার খাতে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের অন্তত ৯০ শতাংশ সরবরাহ করছে। টেক্সটাইল খাতের বিনিয়োগকারীরা অত্যাধুনিক স্পিনিং মিলগুলোতে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এর ফলে তারা দ্রুত সময়ের মধ্যেই কাঁচামাল সরবরাহ করতে সক্ষম।

অন্যদিকে, শার্টের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মাত্র ৪০ শতাংশের যোগান দিতে পারে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। এই খাতে প্রত্যাশিত বিনিয়োগ এখনও হয়নি।

এতে করে দেশের শার্ট রপ্তানিকারকদের নির্ভর করতে হয় আমদানির ওপর। প্রধানত চীন থেকে শার্টের জন্য কাপড় আমদানি করা হয়। এটি সময়সাপেক্ষ হওয়ায় পোশাক ব্যবসায়ীদের জন্য উদ্বেগের অন্যতম প্রধান কারণ।

এ ছাড়া, গত এক দশকে ভোক্তাদের আচরণে পরিবর্তন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক ফ্যাশনে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।

আগে কর্মজীবী মানুষ অফিসের জন্য ফরমাল শার্ট পরতেন। কিন্তু এখন তাদের অধিকাংশই ক্যাজুয়াল পোশাকেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

এতে করে বিশ্বব্যাপী ফরমাল শার্টের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। গত কয়েক বছরে দেশের শার্ট রপ্তানিতেও এর প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সংকলিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে শার্ট রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ২ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই খাতে আয় হয় ২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার।

করোনা মহামারির আগে ফরমাল শার্ট রপ্তানির পরিমাণ বেশ ভালো ছিল। মূলত নিট গার্মেন্টস পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে ফরমাল শার্টের বিক্রি কিছুটা কমেছে। লকডাউনে মানুষ বাড়িতে বেশি সময় থাকায় নিট পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে শার্ট রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ৩ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থবছরে মহামারির সময় এটি নেমে আসে ২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি থেকে মোট আয় ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ এসেছে শার্ট থেকে।

বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করা চতুর্থ পণ্য শার্ট।

Comments