ব্যাংক বহির্ভূত উৎস থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে। মূলত বিদ্যুৎ ও সারের বকেয়া পরিশোধে বিশেষ বন্ড ইস্যু এবং সরকারি বিল বন্ডে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণে এই ঋণ বাড়ল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকায়। আগের অর্থবছরের একই সময়ের ৪৫৬ কোটি টাকার তুলনায় তা প্রায় ৬৯ গুণ বেশি।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সরকার পুরো অর্থবছরে ১১৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—আগে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করার কারণেই গত ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ব্যাংক-বহির্ভূত ঋণও বেড়েছে। ব্যাংকিং খাতের বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের সরকারি সিকিউরিটিজ কেনার আগ্রহ বাড়ার কারণেই এই ঋণ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ ছয় হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা।
এর মধ্যে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়নি। এর পরিবর্তে অর্থবছরের প্রথমার্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ৫৮ হাজার ১১৬ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে।
তবে তফসিলি ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ৬৪ হাজার ১৮৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া, গত অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও সরকার বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সার ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ ১২ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। গত অর্থবছরে একই খাতে ৩৬ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছিল সরকার।
তবে ব্যাংক-বহির্ভূত উৎস থেকে ঋণ নেওয়া বেড়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল সাত হাজার ৮৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে তা বেড়ে ২৪ হাজার ৬৮৮ কোটি ২০ লাখ টাকা হয়েছে।
সাধারণত সরকার সঞ্চয়পত্র ইস্যুর মাধ্যমে ব্যাংক-বহির্ভূত উৎস থেকে ঋণ নেয়। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় টাকা পরিশোধ সঞ্চয়পত্রের বিক্রিকে ছাড়িয়ে গেছে। সেই কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ না বেড়ে বরং তা দুই হাজার ২৪৪ কোটি টাকা কমেছে। গত অর্থবছরেও তা আরও বেশি কমেছিল, যার পরিমাণ ছয় হাজার ৬৩ কোটিতে টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্যাংক-বহির্ভূত খাত থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া সরকারি সিকিউরিটিজের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার প্রমাণ।'
Comments