বাংলাদেশের পোশাক-জুতার দামে ছাড় চায় কয়েকটি মার্কিন ব্র্যান্ড

যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি ক্রেতা ও ব্র্যান্ড বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে পোশাক ও জুতার দামে বড় ছাড় চাচ্ছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন নতুনভাবে শুল্ক আরোপ করায় কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ স্থগিত রেখেছে বলেও জানিয়েছেন রপ্তানিকারকরা।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিদেশি ক্রেতারা রেডি-টু-শিপ পণ্যের ওপর বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের কাছে ১০ শতাংশ মূল্যছাড় দাবি করছেন। পোশাক তৈরির প্রক্রিয়ায় রপ্তানিকারকদের দেরি করতে বলছেন।

বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা এখন নতুন শুল্ক ব্যবস্থার আওতায় পোশাকের দাম নিয়ে দর কষাকষি করছেন। তবে, সব মার্কিন ক্রেতা দাম কমানোর দাবি করছেন না। কারণ, অনেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

বাংলাদেশি রপ্তানিকারক ও মার্কিন ব্র্যান্ডগুলো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রপ্তানিকারক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক মার্কিন ক্রেতা রেডি-টু-শিপ পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ ছাড় চেয়েছেন। সরবরাহকারীদের তিন দশমিক তিন শতাংশ, কাপড় সরবরাহকারীদের তিন দশমিক তিন শতাংশ ও খুচরা বিক্রেতাদের তিন দশমিক তিন শতাংশ ছাড় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।'

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি রুবানা হক ডেইলি স্টারকে জানান, কয়েকজন মার্কিন ক্রেতা বাংলাদেশি রপ্তানিকারদেরকে পণ্যের দাম কমাতে বলেছেন। তবে, তিনি সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে রাজি হননি।

জায়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের মার্কিন ক্রেতারা এখনো কোনো ছাড় চাননি। আমাদের যে কার্যাদেশ আছে তা থাকছে। তবে নতুন কার্যাদেশ পেতে দেরি হতে পারে।'

তিনি আরও বলেন, 'মার্কিন ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর কার্যাদেশ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে। ক্রেতারা মিশর, জর্ডান ও ভারতে কার্যাদেশ পাঠাতে চাইবে। কারণ বাংলাদেশের তুলনায় সেসব দেশে শুল্ক কম।'

প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম তানভীর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্যবসা স্বাভাবিক আছে।'

তার মতে, বাংলাদেশ সুতি কাপড়ের পোশাক রপ্তানিতে আরও ভালো করবে। কারণ এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই শক্তিশালী।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তুলনায় বেশি শুল্ক আরোপ হয়েছে চীন ও ভিয়েতনামের পণ্যের ওপর।

তাছাড়া বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশ পণ্যের মান, কমপ্লায়েন্স ও সক্ষমতার ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করেছে।

'আশা করছি—বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক ১০ শতাংশে কমিয়ে আনতে রাজি করাতে পারবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন ক্রেতা বাংলাদেশি এক রপ্তানিকারকে জানিয়েছেন যে যদি আপনাদের শুল্ক ৩৭ শতাংশে থাকে এবং অন্যান্য দেশের ওপর শুল্ক এখনকার মতো থাকে, তাহলে ভারতের কাছে বাংলাদেশ নিট ও শার্ট ব্যবসা হারাবে। কিছু ডেনিম/বটমের কার্যাদেশ পাকিস্তান, মিশর ও কেনিয়ায় চলে যাবে।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রপ্তানিকারক হোয়াটসঅ্যাপে ডেইলি স্টারকে সেই বার্তা দেখিয়েছেন।

সেই বার্তায় বলা হয়েছে, 'নিশ্চিতভাবেই আগামী কয়েক সপ্তাহে অনেক কিছুই বদলে যাবে। তবে আমরা কঠিন সময়ের দিকে যাচ্ছি।'

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইতোমধ্যে কয়েকজন ক্রেতা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পণ্য রপ্তানি স্থগিত রাখাতে অনুরোধ করেছেন।'

'ছোট ক্রেতারা রপ্তানিকারকদের পুরো শুল্ক দিতে বা খরচ ভাগ করে নেওয়ার চাপ দিচ্ছেন। এটি নীতি-নৈতিকতাবিরোধী। বড় ব্র্যান্ড ও ক্রেতারা এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। মনে হচ্ছে দুইয়েকদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন।'

রপ্তানিকারকদের পক্ষে এই শুল্ক বহন করা খুব কঠিন। 'আমাদের আশা, ব্র্যান্ডগুলো রপ্তানিকারক ও পোশাক শিল্পে জড়িত ৪০ লাখেরও বেশি কর্মীর কথা বিবেচনায় রেখে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের বিশ্বাস, তারা কাউকে অবহেলা করবেন না।'

Comments

The Daily Star  | English

India’s white-ball tour of Bangladesh deferred to September 2026

The Bangladesh Cricket Board (BCB) on Saturday confirmed that India’s white-ball tour of Bangladesh, originally scheduled for next month, has been postponed to September 2026.

36m ago