ময়ূর নামেও ময়ূর নয় যে জলময়ূর

ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

ময়ূরের কথা মনে হলেই ছেলেবেলায় পড়া বিখ্যাত সেই শিশুতোষ ছড়াটির কথা স্মরণে আসতে পারে, যেখানে মেঘ গুড়গুড় মেঘলা দিনে পেখম মেলে ধরা নৃত্যরত ময়ূরের একটি দৃশ্যকল্প আঁকা হয়েছিল।

তবে ছবির এই পাখিটির নামের সঙ্গে ময়ূর নামটি সংযুক্ত থাকলেও আদতে তা ময়ূর নয়। এটি জলাভূমির অতি সুন্দর পাখি জলময়ূর বা পদ্মপিপি। লম্বালেজি এই পাখিটি হাওর, বিল, হ্রদ প্রভৃতি মিঠাপানির জলাভূমিতে বাস করে। সম্ভবত এর বর্ণিল ও লম্বা লেজের সঙ্গে সত্যিকারের ময়ূরের লেজের খানিকটা সাদৃশ্য থাকায় এমন নামকরণ।

ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

দেশের প্রায় সব বিভাগেই জলময়ূরের দেখা মেলে। কখনো একাকী বা জোড়ায়, আবার কখনো ঝাঁক বেঁধে বিচরণ করে। ভাসমান পাতার ওপর হেঁটে হেঁটে জলজ উদ্ভিদে থাকা পোকমাকড়, জলজ উদ্ভিদের কচি পাতা, অঙ্কুর ও বীজ খায়।

জলময়ূর দেশের দুর্লভ একটি আবাসিক পাখি। এখন এর প্রজনন মৌসুম। প্রজননকালে বিশেষ করে স্ত্রী জলময়ূর অত্যন্ত সুন্দর হয়ে ওঠে। এ সময় এদের লেজের দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। এর ঘাড় সোনালি-হলুদ, পিঠ গাঢ় বাদামি, বুক-পেট কালচে-বাদামি ও লেজ কালচে। একটি কালচে-খয়েরি রেখা মাথা ও ঘাড়-গলার সাদা ও সোনালি-হলুদ রংকে পৃথক করেছে। ঠোঁট নীলচে, চোখ বাদামি ও পা নীলাভ-কালো।

ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

স্ত্রী জলময়ূর সাধারণত একাধিক পুরুষের সঙ্গে প্রজনন করে। পুরুষ শাপলা ও পদ্ম পাতা বা এজাতীয় ভাসমান কোনো উদ্ভিদের বড় পাতার ওপর বাসা বানায়। স্ত্রী তাতে জলপাই-বাদামি রঙের ডিম পেড়ে চলে যায়। পুরুষ একাই ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা তোলে। মায়ের আদর জোটে না বাচ্চাদের। সারাজীবন জলেই কাটে এই পাখির জীবন। উড়তেও দারুন পারঙ্গম।

ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

জ্যাকানিডি পরিবারভুক্ত পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম হাইড্রোফ্যাসিয়ানাস ছিররুরগাস। বিভিন্ন এলাকায় এটি নেউ, নেউপিপি বা মেওয়া নামেও পরিচিত।

ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

বুধবার বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বড়বিলা এলাকা থেকে জলময়ূরের ছবিগুলো তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক মোস্তফা সবুজ

Comments

The Daily Star  | English

Türk concerned over changes in Bangladesh's legislation banning activities of parties

"This [the changes in legislation] unduly restricts the freedoms of association, expression, and assembly," says the UN high commissioner for human rights

6m ago