বনের ‘রত্ন’ কালো মথুরা

ছবি: নোবেল চাকমা

নীল-কালোতে মেশানো বাহারি পালকের ওপর বেগুনি রঙের ছটা। এর পাশাপাশি মাথার খাড়া পালক ও চোখের চারপাশ ঘিরে থাকা উজ্জ্বল লাল রঙের চামড়ার আবরণ পাখিটিকে দিয়েছে রাজকীয় চেহারা।  

বাংলাদেশের বিরল এই আবাসিক পাখিটির নাম কালো মথুরা। বাংলাদেশসহ নেপাল, পাকিস্তান হয়ে পশ্চিম থাইল্যান্ড পর্যন্ত হিমালয়ের পাদদেশের বন ও ঝোপঝাড়ে অনেকটা বনমোরগের আকৃতির এই পাখির দেখা মেলে।

মথুরার ইংরেজি নাম Kalij Pheasant, বৈজ্ঞানিক নাম Lophura leucomelanos। বাংলাদেশে এটি কালি মথুরা ও কালি ময়ূর নামেও পরিচিত।

বাংলাদেশে মথুরার বিচরণ প্রধানত পাহাড়ি বনাঞ্চলগুলোতে। এ কারণেই সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনগুলোতে এদের প্রায়ই দেখা যায়। চাকমা, খাসিয়া, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ভাষায় একে ডাকা হয় সানগ্রু, খ্রুট, রই রাতা ও টকরু নামে।

ছেলে ও মেয়ে মথুরার আকার ও রঙে অনেকটা পার্থক্য আছে। মেয়ে মথুরার বাদামি পালকের ধূসর প্রান্ত অনেকটা আঁশের মতো। মাথার চূড়া, লেজের পালক ও গলা প্রায় বাদামি।

সাধারণত বনের প্রান্তে ও বনসংলগ্ন খোলা জায়গায় জোড়ায় জোড়ায় কিংবা ছোট ছোট দলে বিচরণ করতে দেখা যায় এই পাখিকে। ভোরে ও গোধূলিতে এরা বেশি সক্রিয় থাকে। দিনের বেলা গাছের নিচু ডালে বিশ্রাম নেয়। সকাল ও সন্ধ্যায় নিচু স্বরে মুরগির মতো ডাকে। এরা খুব লাজুক প্রকৃতির পাখি। মানুষের আনাগোনা টের পেলে দ্রুত লুকিয়ে পড়ে।

মথুরার খাদ্য তালিকায় আছে বাঁশবীজ, ডুমুর, বটফল, পিঁপড়া, উইপোকা, ছোটো সাপ ও গিরগিটি।

প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন মথুরাকে 'ন্যূনতম উদ্বেগজনক' হিসেবে তালিকাভুক্ত করলেও শিকার ও আবাসস্থল কমে আসার কারণে অনেক এলাকায় পাখিটির সংখ্যা কমেছে।

প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটি সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে তোলা।  

Comments

The Daily Star  | English

Rampal fouling 2 Sundarbans rivers

The Rampal power plant began operation in late 2022 without an effluent treatment plant and has since been discharging untreated waste into the Pasur and Maidara rivers next to the Sundarbans.

4h ago