বেড়েছে ট্রেজারি বিলের সুদ, বাড়বে ঋণের সুদ

বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংকিংখাত, ব্যাংক, আইএমএফ,
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বাংলাদেশে ট্রেজারি বিলের সুদের হার সম্প্রতি সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ অতিক্রম করেছে, যা আগামীতে ঋণের সুদের হার আরও বাড়ার ইঙ্গিত বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।

গতকাল ট্রেজারি বিলের জন্য পৃথক নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। ট্রেজারি বিল ৯১ দিন, ১৮২ দিন ও ৩৬৪ দিনের মধ্যে পরিপক্ব হয়।

সরকার ৯১ দিনের ট্রেজারি বিল থেকে প্রায় ৩ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা, ১৮২ দিনের ও ৩৬৪ দিনের সিকিউরিটিজ থেকে যথাক্রমে ৩০৪ কোটি ও ৫৮২ কোটি টাকা আদায় করেছে।

৯১ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদের হার বা ইয়েল্ড ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ১৮২ দিনের ও ৩৬৪ দিনের সিকিউরিটিজের জন্য যথাক্রমে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ ও ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল।

গত ১২ নভেম্বর সর্বশেষ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যখন ৯১ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদ ছিল ১০ শতাংশ, ১৮২ দিনের সুদ ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ৩৬৪ দিনের সুদ ছিল বার্ষিক ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সব ধরনের ট্রেজারি বিলের সুদ ছিল ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ১০ শতাংশের মধ্যে।

সরকার সাধারণত ট্রেজারি বিল ও বন্ড ইস্যু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ আর্থিক খাত থেকে ঋণ নিয়ে থাকে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যা ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত মোট ঋণের প্রায় ৭৩ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ায় সরকারের এই ঋণের সমালোচনা করেছেন।

তাই সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিবর্তে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।

ব্যাংকাররা বলছেন, ট্রেজারি বিলের উচ্চ সুদ ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদকে প্রভাবিত করবে। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ঋণ উপকরণের সঙ্গে যুক্ত একটি নতুন ঋণ হার ব্যবস্থা চালু করেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণের শর্ত পূরণে বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুনে সুদের হারের সীমা প্রত্যাহার করে এবং নতুন সুদহার ব্যবস্থা চালু করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন ফর্মুলা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের চলমান গড় হারে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিন আরোপ করতে পারে, যা স্মার্ট নামে পরিচিত।

তবে, ট্রেজারি বিলের উচ্চ সুদের কারণে স্মার্ট বাড়ছে। যেমন- বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে স্মার্ট ছিল ৭ দশমিক ১৪, সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ২০ এবং অক্টোবরে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরানুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ট্রেজারি বিলের সুদ যদি ১০ শতাংশের বেশি থাকে, তাহলে ঋণের সুদ ১৪ থেকে ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে।

তিনি আরও বলেন, ঋণের সুদ বৃদ্ধির কারণে আমানতের সুদ বাড়বে।

তবে তিনি আশা করছেন, ক্রমবর্ধমান ঋণের সুদহার চলমান মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সহায়তা করবে।

এদিকে খাদ্য ও অন্যান্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অক্টোবরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে ভোক্তা মূল্য সূচক বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

Comments

The Daily Star  | English

Not satisfied at all, Fakhrul says after meeting Yunus

"The chief adviser said he wants to hold the election between December and June"

2h ago