সংকটে পড়া ৫ ব্যাংক পেল তারল্য গ্যারান্টি

সংকটে পড়া ব্যাংক
অলঙ্করণ: স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তারল্য সহায়তা পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি পেয়েছে সংকটে পড়া পাঁচ ব্যাংক।

গতকাল রোববার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে। গত বৃহস্পতিবার চুক্তি করে ন্যাশনাল ব্যাংক।

গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার পর ১১ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে। এর মধ্যে এই পাঁচ ব্যাংক ছিল।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফোরকানউল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্যারান্টির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছি। সহায়তা পেতে তিন-চার দিন লাগবে।'

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলেও জানান তিনি।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ ধরনের উদ্যোগের ইঙ্গিত দিলে পুনর্গঠিত সাত ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টির জন্য আবেদন করে।

গভর্নর বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক অতীতের মতো টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহায়তা দেবে না। বরং ব্যাংকগুলোকে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে সহায়তা নেওয়ার সুযোগ দেবে।

সাত ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক পাঁচ হাজার কোটি টাকা তারল্য সহায়তা চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টির জন্য আবেদন করে।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক চায় দুই হাজার কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সাত হাজার ৯০০ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংক দেড় হাজার কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক পাঁচ হাজার কোটি টাকা ও এক্সিম ব্যাংক চার হাজার কোটি টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যে পরিমাণ তারল্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে এর বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্যারান্টি অনুমোদন করবে না।'

'কেস-টু-কেস ভিত্তিতে গ্যারান্টি দেওয়া হবে' জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গেও চুক্তি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।'

নয় শর্ত আরোপ

পাঁচ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিতে নয় শর্ত আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

শর্ত অনুসারে, ব্যাংকগুলোকে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ গ্যারান্টি ফি দিতে হবে।

গ্যারান্টিটি কেস-টু-কেস ভিত্তিতে তিন মাসের জন্য দেওয়া হবে। মেয়াদপূর্তির পর মুনাফাসহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

চুক্তির আওতায় ঋণ পরিশোধের পর ব্যাংকগুলো আরও তিন মাস ঋণ নিতে পারবে। এই ঋণের মেয়াদ হবে এক বছর।

সংকটে পড়া ব্যাংকগুলো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তারল্য সরবরাহকারী ব্যাংকগুলো ঋণগ্রহীতা ব্যাংকের নামে ৯০ দিন মেয়াদের 'তলবি ঋণ' তৈরি করতে পারে।

তারল্য সহায়তার বিপরীতে বিদ্যমান স্পেশাল লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) হারে মুনাফা বা সুদ দিতে হবে।

চুক্তি অনুসারে, সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর চলতি হিসাব থেকে টাকা কেটে নিতে পারবে।

এতে আরও বলা হয়, সময়মতো ঋণ পরিশোধ করা না হলে এসএলএফের হারের ওপর অতিরিক্ত দুই শতাংশ সুদ বা মুনাফা আরোপ করা হবে।

ঋণ নেওয়া ব্যাংকের চলতি হিসাব থেকে টাকা আদায়ে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেই ব্যাংকের স্থায়ী সম্পদ, বন্ড ও অন্যান্য সিকিউরিটিজ বিক্রি করে নগদ অর্থ আদায় করবে।

চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে প্রয়োজন অনুসারে তথ্য ও কাগজপত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দিতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক গ্যারান্টির দিকনির্দেশনা পরিবর্তন করতে পারবে।

তারল্য সংকটে পড়া অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আধিপত্য ছিল চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের। সম্প্রতি, ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ থেকে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি সরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Comments

The Daily Star  | English

Violence against women, children: Over 35,000 cases unresolved for over 5 years

More than nine years have passed since a case was filed over the rape of a nine-year-old schoolgirl in Dhaka’s Khilkhet area. The tribunal dealing with the case has framed charges against the lone accused and held 96 hearings but is yet to complete the trial.

11h ago