নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পেতে ব্যবসায়ীরা বেশি দাম দিতে রাজি: এফবিসিসিআই

এখন গ্যাস-বিদ্যুৎ না পেলে বিদেশি ক্রেতার অর্ডার অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। ক্রেতারা একবার ফিরে গেলে আর পাওয়া যাবে না। এমন প্রেক্ষাপটে শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস নিশ্চিত করলে গ্যাসের দামও বেশি দিতে রাজি ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি: সংগৃহীত

এখন গ্যাস-বিদ্যুৎ না পেলে বিদেশি ক্রেতার অর্ডার অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। ক্রেতারা একবার ফিরে গেলে আর পাওয়া যাবে না। এমন প্রেক্ষাপটে শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস নিশ্চিত করলে গ্যাসের দামও বেশি দিতে রাজি ব্যবসায়ীরা।

দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন আজ শনিবার এক অনুষ্ঠানে এই কথা বলেছেন। রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

অবৈধ গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে শিল্পখাতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বেড়েছে. তাই গ্যাস বেশি দামে আমদানি করতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস নিশ্চিত করার জন্য বেশি দাম দিতে রাজি আছে।

ঋণের বিদ্যমান সুদহার বাড়ালে দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করে জসিম উদ্দিন বলেন, যখন সুদহার কমানো হয়েছে, তখন দেশে বিনিয়োগ বেড়েছে। ঋণের সুদহার বাড়ানোর বিষয়ে গবেষণা সংস্থাগুলোর এজেন্ডা থাকে। তারা একেক জনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। বাস্তব হচ্ছে-এর ফলে শিল্প টিকে থাকবে কি না? বর্তমান অবস্থায় সুদহার বাড়ালে শিল্প কোথায় যাবে। তিনি বলেন, বাড়তি ব্যয় কমিয়ে ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। ব্যয়বহুল শাখাসহ ব্যাংকের অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যয় কমাতে হবে।

এ প্রসঙ্গে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ডলার শক্তিশালী করতে সুদহার বাড়িয়েছে। তাদের ফর্মুলা আমাদের দেশে বাস্তবায়ন করলে হবে না। দেশের শিল্পের কথা বিবেচনা করেই নীতি গ্রহণ করতে হবে।

জ্বালানি সংকটের ব্যাপারে তিনি বলেন, কয়লা ভিত্তিক জ্বালানিতে যেতে হবে। আমাদের নিজস্ব কয়লা ব্যবহার করতে হবে। দেশের উন্নয়নে শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সহযোগিতা লাগবে।

বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার হতে চলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বাজার ঘিরে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। বিদ্যমান বিনিয়োগের সঙ্গে আরও নতুন বিনিয়োগ আসলে তাদের ধরে রাখতে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

জ্বালানি নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ এখন বড় ইস্যু। কোভিডের সময় সিদ্ধান্ত ছিল শিল্প বন্ধ করা যাবে না। সেটা সাহসী সিদ্ধান্ত। চলমান সংকটেও তেমন সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। কারণ গত বছর ৫২ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছে। তখন ৩৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বলা হলেও বাস্তবে ছিল না।

জসিম উদ্দিন বলেন, সরকার গ্যাসে ভর্তুকি যা দিচ্ছে এর চেয়ে বেশি ট্যাক্স নিচ্ছে। এলএনজিতে ৪৭ শতাংশ কর এবং ডিজেলে প্রতি লিটারে কর ২৪ টাকা। এই কর হার কমিয়ে বাড়তি দাম সমন্বয় করে নতুন করে যৌক্তিক দাম ঠিক করা যেতে পারে।

সংলাপে এক প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃচ্ছ্রতার কথা বলেছেন। দুর্ভিক্ষ হলে সারা বিশ্বে হবে। বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। এ ক্ষেত্রে আমাদের মিতব্যায়ী হতে হবে। এ জন্য কৃষি উৎপাদন বাড়াতে পারি, পাশাপাশি শিল্পের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। ব্যয় কমাতে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারলে আমরা ভালো করব।

অর্থপাচার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, আমদানির আড়ালে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত মূল্য দেখানোর প্রমাণ পেয়েছে তারা। আন্ডার ইন ভয়েস ও ওভার ইন ভয়েসের মাধ্যমে অর্থ পাচার হচ্ছে। তাদের উচিত জড়িতদের আইনের আওতায় আনা। তা না হলে শুধু বাহবা নেওয়ার জন্য মুখরোচক কথা বলা উচিত নয়।

ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহসভাপতি এম শফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে ইআরএফের শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

2h ago