জুলাই-আগস্টে ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে ১৫ শতাংশ

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্টে ওষুধ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩১ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার।
ওষুধ, ওষুধ রপ্তানি, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
ছবি: সংগৃহীত

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি মাসে গত বছরের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ওষুধ উৎপাদনকারীরা জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে সৃষ্টি হওয়া যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে তারা এ মাসের মধ্যে অর্ডার সরবরাহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তাই আমদানিকারকরা বেশি অর্ডার দিতে শুরু করেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্টে ওষুধ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩১ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার।

গত অর্থবছরে রপ্তানি কমার পর চলতি অর্থবছরে বাড়ল।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট ও পরবর্তীতে অনেক দেশে মার্কিন ডলারের ঘাটতির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ওষুধ রপ্তানি ৭ শতাংশ কমে ১৭৫ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার হয়েছিল।

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম বলেন, 'গত দুই মাসে ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে। কারণ ওষুধ উৎপাদনকারীরা আমদানিকারক দেশগুলোতে সরবরাহ নিশ্চিত করেছে, একইসঙ্গে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতাও কমছে।'

তিনি আরও বলেন, '২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা আছে। তাই আমরা এই মাসের মধ্যে ওষুধ সরবরাহ করতে চাই। যেন ক্রেতারা যে অর্ডার দিয়েছেন তা পাঠাতে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়।'

ওষুধ রপ্তানি সাধারণত মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

'কিন্তু নির্বাচনের কারণে এ বছরটি ভিন্ন। এছাড়া, যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতে সবাই প্রস্তুত,' যোগ করেন তিনি।

তিনি জানান, তবে ব্যবসায়ীদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। কারণ মার্কিন ডলার সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নতুন রপ্তানি গন্তব্য খুঁজে বের করাসহ কাঁচামাল আমদানিতে ঋণপত্র খোলার মতো কিছু সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। এছাড়া, যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হবে না, তাই ওষুধ খাত টিকে থাকার চেষ্টা করছে।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ওয়াসিম হায়দার বলেন, 'রপ্তানিতে সামান্য উন্নতি হয়েছে। এটা সত্য যে- নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো প্রধান রপ্তানি দেশগুলোর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হচ্ছে। তাই তারা ক্রমান্বয়ে ক্রয় আদেশ বাড়াচ্ছে।'

তিনি বলেন, রপ্তানি আয় এখনো গতি ফিরে পাচ্ছে না, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রেতারা এখনো প্রকৃত দামের চেয়ে কম দাম দিচ্ছেন।

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রেনাটা লিমিটেড দাবি করেছে, তারা উৎপাদন ইউনিট বাড়িয়ে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখতে পেরেছে।

প্রতিষ্ঠানটির ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ম্যানেজার অনন্ত সাহা বলেন, 'আমরা গত দুই মাসে প্রায় ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। কারণ, একটি দেশ থেকে বাল্ক অর্ডার পেয়েছি ও চালান তৈরি করেছি।'

রেনাটার ইউরোপীয় সহায়ক সংস্থা রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ারল্যান্ড) লিমিটেড ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জার্মানিতে পার্কিনসন রোগের চিকিত্সার জন্য ওষুধ চালুর অনুমোদন পেয়েছে।

তিনি বলেন, 'এভাবে আমরা বৈশ্বিক বাজার জয় করছি।'

Comments