সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি প্রয়োজন: ডিসিসিআই সভাপতি

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সামীর সাত্তার মনে করেন, দেশে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং মূল্যস্ফীতি কমাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের পাশাপাশি এর সাশ্রয়ী মূল্য নির্ধারণ জরুরি।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ডিসিসিআই, সামীর সাত্তার, মূল্যস্ফীতি,
সামীর সাত্তার

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সামীর সাত্তার মনে করেন, দেশে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং মূল্যস্ফীতি কমাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের পাশাপাশি এর সাশ্রয়ী মূল্য নির্ধারণ জরুরি।

তার মতে, দেশের জ্বালানি খাতকে টেকসই করতে সরকারের উচিত মধ্যপ্রাচ্য ও ওপেক ছাড়া জ্বালানির অন্যান্য উৎসগুলোয় বিনিয়োগ করা।

গত ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সামীর সাত্তার বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকারকে রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত করতে, দক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠাতে ও বিমানবন্দরে অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে আন্তরিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

রপ্তানি বহুমুখীকরণের জন্য শিল্পকারখানার কাঁচামাল আমদানিতে সহযোগিতা ও বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, করোনা মহামারি আসার আগে গত এক দশকে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে গড়ে ৬ শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

মহামারির কারণে সৃষ্ট প্রতিকূলতা থেকে অর্থনীতি যখন পুনরুদ্ধার করা হচ্ছিল, তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল ও বাণিজ্য ব্যবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এর ফলে পণ্য সরবরাহে সংকট, মূল্যবৃদ্ধি ও ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

তারপরও সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে বাংলাদেশ ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে উদ্ভূত বিভিন্ন সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ দেশের অগ্রগতিকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।

গত অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ হ্রাসের মতো ২টি প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল যা অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে।

মুদ্রার বিনিময় হারে অস্থিতিশীলতা ও রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামালের আমদানিমূল্য বেড়ে যাওয়া দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে এবং অর্থনীতিতে ব্যাঘাত ঘটায়। স্থানীয় সরবরাহ শৃঙ্খল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির মুখে পড়ে।

বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহ সংকটের কারণে সরকার পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামও বাড়িয়েছে।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, 'জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি সামগ্রিকভাবে ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।'

তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকট সত্ত্বেও ২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ বেশকিছু বড় মাইলফলক ছুঁয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু ২০২২ সালের জুনে উদ্বোধন করা হয়। এটি দেশের বার্ষিক জিডিপি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালু হওয়ায় ঢাকার গণপরিবহনখাতে নতুন পালক যুক্ত হয়েছে। এটি যানজট কমাবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ত্বরান্বিত করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

সামীর সাত্তারের মতে, বর্তমান মূল্যস্ফীতির চাপ নতুন অর্থবছরেও অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনকি, তা আরও খারাপ হতে পারে।

Comments