বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে জি-২০ জোটকে ভূমিকা রাখার আহ্বান অর্থমন্ত্রীর

চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে জি-২০ জোটকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
আ হ ম মুস্তফা কামাল, জি-২০, জি-২০ সম্মেলন, ভারত,
ভারতের গুজরাটের গান্ধীনগরে জি-২০ সম্মেলন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ছবি: সংগৃহীত

চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে জি-২০ জোটকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, 'এবারের জি-২০ সামিটের স্লোগান করা হয়েছে- 'এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ'। বিশ্বব্যাপী যে চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদেরকে অধিকতর সচেতন হতে হবে। এই সংকট নিরসনে অবশ্যই আমাদের সকলকে আন্তরিক হয়ে সমাধান করতে হবে। যেখানে জি-২০ জোটের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।'

ভারতের গুজরাটের গান্ধীনগরে জি-২০ সম্মেলন তিনি এ আহ্বান জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, 'বিশ্বের শিল্পোন্নত ২০টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত জি-২০ হচ্ছে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক জোট। বৈশ্বিক অর্থনীতির মূল বিষয়গুলোর ওপর আলোচনার জন্য বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একত্রিত করার উদ্দেশ্যেই এই জোট গঠিত হয়। আয়োজক দেশ ভারত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশকেই 'গেস্ট কান্ট্রি' হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেশী বন্ধু দেশের কাছ থেকে পাওয়া এ আমন্ত্রণ অবশ্যই আমাদের জন্য অনেক সম্মানের। জি-২০ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশের জন্য বৈশ্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার অংশ হওয়ার এক অনন্য সুযোগ।'

তিনি আরও বলেন, 'আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনেও 'গেস্ট কান্ট্রি' হিসেবে অংশ নেবে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা এই বছরের ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে।'

অর্থমন্ত্রী সম্মেলনে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি উল্লেখ করে বলেন, 'বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে আমাদের জিডিপি ছিল মাত্র ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমাদের জিডিপি এখন ৪৬০ বিলিয়ন ডলার। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী ও দৃঢ় নেতৃত্বে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, ২০৩৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২৪তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি স্মার্ট উন্নত দেশে পরিণত হওয়া। আশা করা যায় অচিরেই বাংলাদেশ জি-২০ জোটে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে।'

উল্লেখ্য, জি-২০ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের ২ দিনের সম্মেলন আজ ভারতের গুজরাটের গান্ধীনগরে শুরু হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছে।

জি-২০ জোটে বাংলাদেশ সদস্য না হলেও শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারত সদস্য দেশগুলোর বাইরেও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ৯টি দেশকে 'গেস্ট কান্ট্রি' হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এসব দেশের প্রতিনিধিরা জি-২০ সম্মেলনের বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নিবেন। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে 'গেস্ট কান্ট্রি'র মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ।

Comments