উন্নয়নশীল দেশ হলেও কানাডায় শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

কানাডায় তৈরি পোশাক রপ্তানি
চট্টগ্রামের একটি তৈরি পোশাক কারখানা। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার ফাইল ফটো

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পরও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কানাডার বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা পেতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশের এক শীর্ষ ব্যবসায়ী।

এ ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার পর কানাডা হবে তৃতীয় দেশ।

২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর উত্তর আমেরিকার এই দেশে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা বজায় থাকতে পারে।

জেনারেল প্রেফারেন্সিয়াল ট্যারিফ (জিপিটি) প্লাস স্কিমের আওতায় কানাডার সরকার উন্নয়নশীল দেশগুলোর পণ্য সে দেশের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা দিতে যাচ্ছে। এটি 'জিপিটি প্লাস' নামেও পরিচিত।

বর্তমান স্কিমটি ২০২৪ সাল পর্যন্ত থাকবে। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কানাডা 'জিপিটি প্লাস' নিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

২০০৩ সাল থেকে কানাডার স্বল্পোন্নত দেশ শুল্ক (এলডিসিটি) প্রকল্পের আওতায় সেখানে বাংলাদেশের পণ্য শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পেয়ে আসছে। উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর কানাডায় বাংলাদেশের এই বাণিজ্য সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কানাডা নতুন বাণিজ্য স্কিম গ্রহণ করায় ২০৩৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সেখানে শুল্ক সুবিধা পাবে।'

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের জন্য কানাডা অন্যতম প্রধান বাজার।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কানাডায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ১৫৫ কোটি ডলারে পৌঁছে। এর আগের অর্থবছরের তুলনায় তা ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি।

উত্তর আমেরিকার শিল্পসমৃদ্ধ এই দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানির ৯৫ শতাংশেরও বেশি আসে পোশাক পণ্য থেকে।

বিজিএমইএ বলছে, বাংলাদেশ থেকে কানাডার আমদানি ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশেই রয়ে গেছে। অর্থাৎ, দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার প্রসারিত করার সম্ভাবনা আছে।

এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় ফারুক হাসান বলেন, 'জিপিটি প্লাসের মাধ্যমে কানাডায় আমাদের পণ্যের বাজার আরও বড় করার লক্ষ্য নেওয়া উচিত। আমাদের প্রচেষ্টা ও সম্পদ দিয়ে এই সম্ভাবনাকে যত বেশি সম্ভব কাজে লাগানো দরকার।'

কানাডার অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, নতুন স্কিমটি জিপিটির আওতায় পণ্যের বাজার প্রসারিত করার চেষ্টা করবে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রম অধিকার ও পরিবেশগত মান মেনে চলা উন্নয়নশীল দেশগুলোর পণ্য জিপিটির তুলনায় বেশি শুল্ক সুবিধা পাবে।

ফারুক হাসান আরও বলেন, 'ভালো সংবাদ হচ্ছে কানাডার পার্লামেন্ট অর্থ বিল অনুমোদন করেছে। সেখানে জিপিটি স্কিমের মেয়াদ ২০৩৪ সালের শেষ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।'

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশ কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করেছে এবং পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার দিক থেকে দেশটি এখন বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের নীতিমালা মেনে ২০০টি পোশাক কারখানা তৈরি করেছে। আরও ৫০০ কারখানা এই মার্কিন প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতির অপেক্ষায়।

'বাংলাদেশের শ্রমমান উন্নত হয়েছে' উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, 'তাই, কানাডার নতুন বাণিজ্য স্কিমের আওতায় বাণিজ্য সুবিধা পাওয়ার জন্য পরিবেশ ও শ্রম অধিকার সম্পর্কিত শর্তগুলো পূরণ করা বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য সমস্যা হবে না।'

তার মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো অন্যান্য দেশ ও বাণিজ্যিক জোটগুলোরও উচিত বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ হতে চলা অন্যদেরকেও একই সুবিধা দেওয়া।

Comments

The Daily Star  | English

Ritu Porna brace takes Bangladesh to verge of history

Ritu Porna Chakma scored a spectacular brace to guide Bangladesh to the verge of a maiden Asian Cup berth as Bangladesh beat favourites Myanmar 2-1 in their second qualification fixture of Group C at the Thuwunna Stadium in Yangon on Wednesday.

37m ago