টাকাকে শক্তিশালী করার চেষ্টা ডলারের দামে প্রভাব ফেলছে না

ডলারের দাম
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনায় ব্যাংকগুলো টাকার দাম ৫০ পয়সা বাড়িয়ে দিলেও ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হারে কোনো প্রভাব পড়েনি।

গত বৃহস্পতিবার এমন দৃশ্য দেখা যায়।

গত বুধবার বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) রপ্তানিকারক ও প্রবাসীদের কাছ থেকে প্রতি ডলার ১১০ টাকায় কেনার এবং আমদানিকারকদের কাছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।

গত বৃহস্পতিবার বেশিরভাগ ব্যাংক ডলারপ্রতি প্রবাসীদের ১২২ থেকে ১২৩ টাকা ও রপ্তানিকারকদের ১১৩ থেকে ১১৪ টাকা দেয় এবং আমদানিকারকদের কাছ থেকে ১১৬ থেকে ১১৮ টাকা নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মুদ্রাবাজার নিজস্ব গতিতে চলছে এবং বাফেদা-এবিবির বেঁধে দেওয়া বিনিময় হার মোটেও কাজ করছে না।

তারা আরও জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকের একদিন পর বাফেদা-এবিবি নেতাদের ডলারের নতুন বিনিময় হার ঘোষণা করা যেন ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাফেদা ও এবিবি তাদের ওপর মুদ্রার বিনিময় হার চাপিয়ে দেওয়ায় তারা তা গ্রহণ করতে পারছেন না।

তারা জানান, বাজারে চাহিদার প্রেক্ষাপটে এখনো ডলারের ঘাটতি আছে। তাই ডলারের বিপরীতে টাকার মান বাড়ানোর এটাই সঠিক সময় নয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ডলার ঘাটতির কারণে এলসি খুলতে পারছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, বাফেদা-এবিবির সিদ্ধান্ত সঠিক ও সময়োপযোগী।

তিনি আরও বলেন, সরবরাহ ও চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়।

তার মতে, 'আমরা আমদানি ও বৈদেশিক দায় মেটাতে ডলার খরচ করেছি। এখন আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলে ডলারের চাহিদা কমেছে।'

ব্যাংক কর্মকর্তারা এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, বাজারে ডলারের চাহিদা এখনো বেশি।

মেজবাউল হক আরও বলেন, 'চলতি হিসাবে এক বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত আছে। নেতিবাচক আর্থিক হিসাব ক্রমাগত কমে আসছে।'

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের মতে, কয়েকটি ব্যাংকে ডলার ঘাটতি থাকলেও কয়েকটি ব্যাংকে অতিরিক্ত ডলার আছে। এই অসামঞ্জস্যতা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডলারের দাম নির্ধারণে বাফেদা-এবিবি মডেল বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে চলমান অস্থিরতা কমাতে ব্যর্থ হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'মুদ্রা বাজারের জন্য এই মুহূর্তে ভাসমান বিনিময় হার খুবই প্রয়োজন। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত নিয়ন্ত্রিত ভাসমান বিনিময় হার চালু করা।'

নিয়ন্ত্রিত ভাসমান বিনিময় হারে ডলারের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ হার উল্লেখ করা থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English

Iran strikes back at Israel with missiles over Jerusalem, Tel Aviv

Iran's Supreme Leader accuses Israel of initiating war, vows painful revenge

4h ago