রুশ প্রতিষ্ঠান ফেসকোর কন্টেইনার পরিষেবায় যুক্ত হলো চট্টগ্রাম বন্দর
রাশিয়ার অন্যতম শীর্ষ শিপিং প্রতিষ্ঠান ফার ইস্টার্ন শিপিং কোম্পানি (ফেসকো) দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে রাশিয়ায় সরাসরি জাহাজ চলাচলের আওতা বাড়াতে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার পরিষেবা চালু করেছে।
গত শুক্রবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, মস্কোভিত্তিক লজিস্টিক অপারেটর ফেসকো ট্রান্সপোর্ট গ্রুপ তাদের ইন্ডিয়ান লাইন ওয়েস্ট মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের পরিধি বাড়াচ্ছে।
কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার নোভোরোসিস্ক বন্দরের সঙ্গে ভারতের শীর্ষ কন্টেইনার বন্দর গুজরাটের মুন্দ্রা ও দ্বিতীয় শীর্ষ কন্টেইনার বন্দর মহারাষ্ট্রের নবসেবার (জওহরলাল নেহেরু বন্দর) সংযুক্তকারী প্রতিষ্ঠান ফেসকো ইন্ডিয়ান লাইন ওয়েস্ট গত ফেব্রুয়ারিতে সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ পরিবহন চালু করেছে।
পরে আগস্টে ফেসকো এই রুটে নিজস্ব কন্টেইনার জাহাজ চলাচল শুরু করে। এই পরিষেবায় এখন শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে কন্টেইনার পরিবহনের সেবাও যুক্ত হলো।
বাংলাদেশে এই কন্টেইনার সার্ভিসটির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ফেসকোর এ দেশীয় এজেন্ট হিসেবে স্থানীয় শিপিং প্রতিষ্ঠান রেজেনসি লাইন্স নিযুক্ত হয়েছে।
রেজেনসির সহযোগী দেশের অন্যতম শীর্ষ শিপিং প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্রুপের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক আনিস উদ দৌলা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত অক্টোবরের শুরুতে রেজেনসি লাইন্স ফেসকোর বাংলাদেশি এজেন্ট হিসেবে যুক্ত হয়।'
শিপিং সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে গত অক্টোবরে ফেসকোর ২০ একক (টিইইউএস) খালি কন্টেইনার দেশে এসেছে। আনিস উদ দৌলা জানিয়েছেন, এ দেশে ফেসকোর জাহাজ চলাচল পরিষেবা এখনো চালু হয়নি।
এই পরিষেবার আওতায় রাশিয়াগামী কন্টেইনারগুলো ফিডার জাহাজে করে কলম্বো বন্দরে ট্রান্সশিপমেন্টের পর সেখান থেকে মুন্দ্রা বন্দরে নিয়ে যাওয়া হবে।
মুন্দ্রা থেকে কন্টেইনারগুলো ফেসকোর জাহাজে তুলে দেওয়া হবে। এতে আনুমানিক ৪৫ দিন সময় লাগতে পারে।
বিদ্যমান ইন্ডিয়ান লাইন ওয়েস্ট মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসে আওতায় রাশিয়ার আমদানি পণ্য হিসেবে বেশিরভাগই থাকে ভোক্তা ও হালকা শিল্প পণ্য এবং রপ্তানি পণ্যে থাকে কাঠ, রাসায়নিক ও অবকাঠামো উপকরণ।
ফেসকোর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম থেকে কলম্বো ও মুন্দ্রা হয়ে নোভোরোসিস্ক বন্দরে পাঠানো কার্গোর আমদানি ভাড়া প্রতি ২০ ফুট কন্টেইনারের জন্য দুই হাজার ৪০০ ডলার ও ৪০ ফুট কন্টেইনারের জন্য তিন হাজার ৭০০ ডলার ধরা হয়েছে।
এ দিকে, নভোরোসিক-মুন্দ্রা রুটে চট্টগ্রামগামী কার্গোর রপ্তানি ভাড়া হবে প্রতি ২০ ফুট কন্টেইনারের জন্য দুই হাজার ২০০ ডলার ও ৪০ ফুট কন্টেইনারের জন্য তিন হাজার ৭০০ ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ রাশিয়ায় ৪৬০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে।
গত জুলাই থেকে অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় রপ্তানি হয়েছে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেশি।
Comments