সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিতে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি কমেছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বাংলাদেশের কোটিপতি,

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে ঋণের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ।

ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির শ্লথগতির মূল কারণ ঋণের সুদহার বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে আমদানি কমে যাওয়া এবং ব্যাংকিং খাতের তারল্য সংকট।

এছাড়া চলতি অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ পয়েন্ট কম ছিল।

দেশে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে জানুয়ারিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আলী বলেন, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে ঋণের সুদহার বাড়তে থাকায় ঋণগ্রহীতাদের ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার আগ্রহ কমছে।

জানুয়ারিতে ব্যাংককে যে হারে ঋণ দেয় তার সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২২ সালের মে মাসে মুদ্রানীতি কঠোর করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে নীতি সুদহার টানা অষ্টমবারের মতো বাড়ানো হয়।

এদিকে ছয় মাসের মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল (স্মার্ট) চালু করে মুদ্রা সরবরাহে কড়াকড়ি অব্যাহত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডিসেম্বরে স্মার্ট হার ছিল ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ, জানুয়ারিতেও একই হার ছিল। ঋণদাতারা ঋণ দেওয়ার সময় স্মার্টের সঙ্গে মার্জিন হিসেবে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ আরোপ করতে পারে।

মোহাম্মদ আলী বলেন, ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে মূল্যস্ফীতির চাপে লাগাম টানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন সঠিক পথেই আছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাস ধরে দেশের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি ছিল, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ফেব্রুয়ারিতে কিছুটা কমে হয়েছে ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

অন্যদিকে ইস্টার্ন ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খুরশেদ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঋণ প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি সবসময় উচ্চ সুদ হারের কারণে হয় না।

তিনি বলেন, মার্কিন ডলার সংকটের মধ্যে ঋণপত্র খোলার জটিলতার কারণে বর্তমানে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান পুরোদমে চলছে না, যার প্রভাব পড়ছে ঋণ প্রবৃদ্ধিতে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে মোট ৩ হাজার ৯২৫ কোটি ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ কম।

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

57m ago