১৮ মাস ধরে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে না সাইফ পাওয়ারটেক

প্রতিষ্ঠানটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এর পরিচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
সাইফ পাওয়ারটেক

সাইফ পাওয়ারটেক গত দেড় বছরে ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। এটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির নিয়মের লঙ্ঘন।

অবকাঠামো সহায়তা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন বা একই বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। এ ছাড়া, পরবর্তী বছরের দুই প্রান্তিক অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রতিবেদন প্রকাশেও ব্যর্থ হয়েছে।

ফলে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অন্ধকারে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এরই মধ্যে কয়েকজন বড় বিনিয়োগকারী নিজেদের মধ্যে শেয়ার কেনাবেচা করে এর দামে কারসাজি করছেন। ফলে গত সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বেড়েছে।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাইফ পাওয়ারটেকের শেয়ারের দাম আগের দিনের তুলনায় নয় দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়ে গেইনারের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে।

বিনিয়োগকারী মোতাহার হোসেন মাসুম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ভালো মুনাফার আশায় দুই বছর আগে তিনি ২৯ টাকায় সাইফ পাওয়ারটেকের শেয়ার কিনেছিলেন।

তবে দাম কমার পর গত সপ্তাহে তা বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

এ ছাড়াও, প্রতিষ্ঠানটি সবশেষ অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ দেয়নি।

এখন প্রতিষ্ঠানটি লোকসানে ডুবে যাচ্ছে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত এই বিনিয়োগকারী।

'প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে গেছে বা এখনো চালু আছে কিনা জানি না। কারণ তারা কোনো তথ্য প্রকাশ করছে না। আমি এই মুহূর্তে পুরোপুরি অন্ধকারে,' যোগ করেন তিনি।

দ্য ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে সাইফ পাওয়ারটেকের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসান রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্ট সেকশনে আগুন লেগেছিল।'

'আমরা তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা করছি। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানিয়েছি। আশাবাদী, এক মাসের মধ্যে সব আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারব।'

গত বছরের নভেম্বরে প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রধান কার্যালয়ে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছিল। তারা বলেছে, দাম ও পরিমাণের দিক থেকে ক্ষতির পরিমাণ বিস্তারিত তদন্তের পর জানা যাবে।

কিন্তু, পরে কিছু জানানো হয়নি।

লিস্টিং বিধিমালা অনুসারে, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ছাড়া তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আর্থিক বিবরণী অর্থবছর শেষ হওয়ার পর ১২০ দিনের মধ্যে নিরীক্ষা করতে হবে।

নিরীক্ষার ১৪ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।

ত্রৈমাসিক আর্থিক বিবরণীর ক্ষেত্রে, জীবন বিমা ছাড়া তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে তৃতীয় প্রান্তিক শেষ হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে তা তৈরি ও জমা দেওয়ার পাশাপাশি সবাইকে জানাতে হবে।

এই দেরির ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

প্রতিষ্ঠানটির নিয়ম না মানার ব্যর্থতার বিষয়টি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) জানে। তাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

সংশ্লিষ্ট দপ্তর ইতোমধ্যেই বিষয়টি চিহ্নিত করে এনফোর্সমেন্ট বিভাগে পাঠিয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিষ্ঠানটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এর পরিচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

Comments

The Daily Star  | English
Dhakeshwari Temple Yunus speech

Want to build a Bangladesh where everyone's rights are ensured: Yunus

Seeking law enforcement's support during celebration a 'collective failure', he added

1h ago